নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘দেশি-বিদেশি নানা মহলের চাপে ভোটারবিহীন সরকারের প্রধামমন্ত্রী এখন সম্পূর্ণ নির্বিকার হয়ে পড়েছেন। আর এজন্যই তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে অশালীন ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘তথাকথিত উন্নয়নের ন্যায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ব্যবহৃত শব্দাবলিরও উন্নয়ন ঘটতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, উনি (প্রধানমন্ত্রী) উনার গোপালিশ বাংলাতে কথা বলার অভ্যাসকে কিছুটা কাটানোর জন্য দু-একটি তৎসম শব্দ শিখতে ও তা প্রয়োগ করতে শুরু করছেন।’
বুধাবার একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন “আমি তার (খালেদা জিয়া) বক্তব্য ধর্তব্যে নেই না”।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ও মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে প্রতি সপ্তাহে আদালতে হাজিরার মাধ্যমে হয়রানি করছে সরকার। কারণ ভোটারবিহীন সরকার ও সরকারপ্রধানের প্রধান টার্গেট হচ্ছেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা এমন বক্তব্য রেখেছেন যার উত্তর দেয়াটাও কোনও ভদ্রলোকের পক্ষে শোভনীয় নয়। তারপরও বলতে হয়, স্বৈরাচারি শক্তি সবসময় বিরোধী মত, চিন্তা ও বিশ্বাসের সহাবস্থানকে ভয় পায় বলেই গণতন্ত্রে অপরিহার্য বিরোধী দলের আওয়াজকে ধর্তব্যে না নিয়ে নির্দয় নিষ্ঠুর দমনের পন্থার ওপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।’
এসময় বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর এহেন উদ্ভট কাণ্ডজ্ঞানহীন ও পরশ্রীকাতর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন দেয়ার পেছনে বর্তমান অবৈধ সরকারের বড় ধরনের ষড়যন্ত্র রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ নানা ধরনের চাপকে অন্য দিকে সরাতে পরিকল্পিতভাবে এসব বর্বরোচিত হামলা-অগ্নিসংযোগ চালাচ্চে সরকার। কারণ, সরকার ভালো করেই জানে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানিয়ে রাজপথে আসা দলের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ বিনা উস্কানিতে লাঠিচার্জ করেছে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
এ সময় দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশব্যাপী দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আগামী ২০ নভেম্বর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫২তম জন্মবার্ষিকী। দিনটিকে কেন্দ্র করে তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনায় সারা দেশে দোয়া মাহফিল করবে বিএনপি। জন্মবার্ষিকীকে ঘিরে ২৫ নভেম্বর রাজধানীতে একটি আলোচনা সভা করবে বিএনপি।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন ও সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।