নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শনিবার,০৭ এপ্রিল ২০১৮: ‘সবাইকে প্রশ্ন দেব, তবে অরিজিনাল ছাত্র হতে হবে, আগে কমন পরে টাকা’। ‘প্রশ্ন আউট হওয়া মাত্রই আমি তোমাদের দিয়ে দেব, রিয়েল প্রশ্ন বের হলে আমিই দেব, তোমাদের বলতে হবে না’- ইত্যাদি লেখাসংবলিত স্ট্যাটাস প্রতিনিয়ত ফেসবুকে পোস্ট করত এহসানুল কবির। এভাবে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে রাজধানীর শাহজাহানপুর থেকে এহসানুল কবিরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব-৩ এর একটি দল মালিবাগ বাজার রোড, শেলটেক ড্রিম ১৫৩/১, ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান জানান, চলমান এইচএসসি পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতারণামূলক প্রশ্নফাঁসে জড়িত চক্রের অন্যতম হোতা এহসানুল কবির। সে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার গোরিয়ালি এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। রংপুর ব্যুরো জানায়, বাবুল মিয়া রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি।
এএসপি মিজানুর রহমান বলেন, এহসানুল কবির টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে ভুয়া প্রশ্নপত্র হোয়াটস অ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে আদান-প্রদান করত। সে নিজের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে ‘পার কোয়েসশন ৩০০ টাকা এইচএসসি’ এবং ফেসবুকে নিজস্ব আইডি ‘কোয়েসশন ডাটা’ খুলে প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রচারণা চালাত। তিনি আরও বলেন, এহসানুল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং তৎসংক্রান্ত লোভনীয় ও অনৈতিক প্রচারণা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করত।
সে ৩০-এর বেশি হোয়াটস অ্যাপ জিপির অ্যাডমিনদের সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসসংক্রান্ত প্রচারণা চালাত। তার মোবাইলে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপের সদস্য সংখ্যাও প্রায় হাজারের ওপর। নামে-বেনামে তার ফেসবুকে এবং হোয়াটস অ্যাপে অনেক গ্রুপ রয়েছে। সে প্রশ্নফাঁসকারী বিভিন্ন শক্তিশালী গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান এ র্যাব কর্মকর্তা।
প্রশ্নফাঁস চক্রের ১০ জন আটক : শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রভাবশালী প্রশ্নফাঁস চক্রের মূলহোতাসহ ১০ জনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। চক্রটি ইলেকট্রনিক যন্ত্র দিয়ে সরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা এবং সরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছিল।
গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) এডিসি গোলাম সাকলাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ চক্রের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অফিসারকেও গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। শনিবার (আজ) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।