শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

মধ্যরাতে কাস্তে হাতে কৃষকের ধান কাটলেন ডিসি!

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ০ Views পাঠক
শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০

হাবিব সরোয়ার আজাদ, বর্তমানকন্ঠ ডটকম, সুনামগঞ্জ : এবার নিজেই কাস্তে (কাঁচি) হাতে নিয়ে মধ্যরাতে হাওরে থাকা কৃষকের পাকা ধান কাটলেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি)। জানা গেছে, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমন রোধের পাশাপাশী আগাম বন্যা ধেয়ে আসার পুর্বেই দ্রুত ধান কেটে গোলায় তোলতে কৃষক ও ধাওয়ালী (ধান কাটা শ্রমিক)দের উৎসাহ দিতে সুনামগঞ্জের ডিসি মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ রাতে নিজ হাতে কাস্তে নিয়ে ধান কাটতে হাওরে নামলেন।

বৃহম্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সদর উপজেলার জলভাঙা হাওরের ধান কাটার সময় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, ইউএনও ইয়াসমিন নাহার রুমাসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের একাধিক দায়িত্বশীলদেরর ধান কাটতে দেখা গেছে।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল সুত্র জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী চলতি এপ্রিল মাসের ২৬ হতে ৩০ তারিখ অবধি অতিবৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয়য়ের পাহাড়ি ঢলের কারনে আগাম বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।

চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ছোট বড় ১৫৪ হাওরে প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ২ লাখ ২০ হাজার ৯৪৩ হেক্টও জমিতে এক ফসলী বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে।

এদিকে আগাম বন্যায় লাখ লাখ কৃষকের বোরো ফসলহানীর আশংকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত কৃষকের পাকা ধান কেটে গোলায় তোলার নির্দেশনা দেবার পাশাপাশী জেলার কৃষকদের জন্য ৪০টি কম্বাইন হার্ভেস্টার (ধান কাটা, মাড়াই) যন্ত্র উপহার দিয়েছেন।

অন্যদিকে বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে বিশ্বে সমূহ খাদ্য ঘাটতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এসব কম্বাইন হার্ভেস্টার দিনের বেলায় একটানা হাওরে আট ঘন্টা ধান কাটার পর বিকেলের দিকে যন্ত্রটি বিরতির পর রাতে ফের ধান কাটতে সক্ষম হবে।

এ কারনে জেলা প্রশাসক জেলার সকল কৃষকের শতভাগ বোরো ধান কেটে গোলায় তোলার উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশী কৃষক, ধাওয়ালী (ধান কাটা শ্রমিক)’দের রাতে ধান কাটতে উৎসাহ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নিজেই কাস্তে হাতে কৃষককের ধান কাটতে হাওরে নামলেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জেলার কৃষকদের ৪০টি কম্বাইন হার্ভেস্টার (ধান কাটা, মাড়াই) যন্ত্র দিয়েছেন আগাম বন্যা ও অতিবৃষ্টির কবল হতে সারা বছরের একটি মাত্র বোরো ফসল দ্রুত কেটে গোলায় তোলতে। তিনি আরো বলেন, এক্ষেত্রে ভাবলাম কম্বাইন হার্ভেস্টার (যন্ত্র) দিনে আট ঘন্টা ধান কাটার পর বিকেলের দিকে যন্ত্রটি বিরতি দেয়া হচ্ছে, তাহলে সেটি রাতেও ব্যবহার করে বন্যা আসার আগেই যদি আমরা শতভাগ বোরো ধান কেটে গোলায় তোলতে পারি তাহলে জেলার লাখ লাখ কৃষক ও কৃষক পরিবারের মানুষজন স্বস্থিতে থাকবেন এবং তাদেরকে খাদ্য ঘাটতির মুখে পড়তে হবেনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই পাতার আওর সংবাদ