রিকশাচালকের ছেলে জয় চৌধুরী ও দিনমজুরের ছেলে আবু রায়হানসহ অনেকেরই স্বপ্ন পুলিশে চাকরি করার। তাদেরমত হাজার হাজার যুবকের ধারনা পুলিশে চাকরি করতে যোগ্যতা নয়, লাগে বাড়তি টাকা। আর তাদের সেই ভুল ধারা কাটিয়ে চাঁদপুরে ১০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফটে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ৫০ জন।
মেধা-যোগ্যতায় এভাবে পুলিশে ১শ’ টাকায় চাকরি পেয়ে খুশি তারা ও তাদের পরিবার। চূড়ান্ত প্রার্থীরা এখনো বিশ্বাসই করতে পারছেন না, তারা পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। আর সেই সুযোগটি তৈরি করে দিলেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।
রোববার (০৭ নভেম্বর) চাঁদপুর পুলিশ লাইন্স ড্রিল সেডে চাঁদপুরে রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের পরবর্তী করণীয় বিষয়ক ব্রিফিং-এ নিয়োগ পরীক্ষায় নির্বাচিত ৫০ জন নারী-পুরুষকে ফুলদিয়ে বরণ করেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদসহ অন্যান্য পুরিশ সদস্যরা।
পুলিশে চাকরি পেয়ে নিজেদের অনুভূতি জানান জয় চৌধুরী ও আবু রায়হান। তারা বলেন, ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর মা-বাবা আমাকে ধরে কেঁদে ফেলেন। আমার বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। খুব সহজে পুলিশের চাকরি পাব কখনও কল্পনা করিনি। আমরা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।
স্বচ্ছতা ও সততার এমন বিরল দৃষ্টন্ত স্থাপন করে প্রশংসিত চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো.মিলন মাহমুদ। শুধু তাই নয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের সকল প্রকার মেডিকেল চেকআপ পুলিশ হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করেন তিনি।
পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ এখন সব দিক ধেকে সক্ষম এবং অধুনিক। আমাদের মাননীয় আইজিপি স্যার বাংলাদেশ পুলিশকে আধুনিক ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে আইজিপি স্যারের নির্দেশে পুলিশের সকল পদে নিয়োগ পক্রিয়ার মানোন্নয়ন করা হয়েছে। চাঁদপুরে পুলিশের মানোন্নয়ন ও স্বচ্চ পক্রিয়ায় ৫০ জর যোগ্য ব্যক্তিকে আমরা নিয়োগ দিতে পেরেছি। যাদের মাত্র ১০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফ করতে হয়েছে। এছাড়া আর কোন খরচ হয়নি। অবৈধ পন্থা কিংবা দালাল ধরতে হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আজকে যারা মাত্র ১শ’ টাকায় পুলিশে নিয়োগ পেলো, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে সারাজীবন সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবে। তোমরা যে স্বচ্চতার মাধ্যমে পুলিশে নিয়োগ পেলে- কর্মজীবনে সে স্বচ্চতা ধরে রাখবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়ের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়াটার) মোহাম্মদ মঈনুল ইসলামের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, নিয়োগ পরিক্ষার দায়িত্বরত সিভিল সার্জন প্রতিনিধি ডা. মো. মাসুদ রানা প্রমুখ।
সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর জেলাতেও ২৭ অক্টোব পুলিশের ‘ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে’ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এ পরীক্ষায় সর্বমোট ২হাজার নারী-পুরুষ অংশ নেন। যার মধ্য থেকে প্রথম ধাপে ৪১৩ জন, দ্বিতীয় ধাপে ১২৯ জন এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষে চুড়ান্তভাবে ৫০ জনকে নির্বাচন করা হয়। এছাড়া অপেক্ষমাণ তালিকায় ১১ জনকে রাখা হয়েছে। নির্বাচিত সদস্যদের মেডিকেল রিপোর্টে যদি কেউ বাদ পরে তাহলে সেই তালিকা থেকে বেশি মার্ক পাওয়াদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেওয়া হবে বলে জানা যায়।