নিউজ ডেস্ক,ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শনিবার,২৫ নভেম্বর ২০১৭: নরসিংদীর মাধবদীতে যৌতুকের বলি হয়েছেন ফারজানা ইয়াসমিন জেরিন (২২) নামে এক গৃহবধূ। র্দীঘদিন নির্যাতনের পর পাষন্ড স্বামী গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা ও ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটকের চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। ২৫ নভেম্বর এঘটনায় নিহতের বাবা মেয়ের জামাই ও ভাশুর তাঁতী লীগের আহবায়ক সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মাধবদী থানায় হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তাঁতী লীগের আহবায়ক শাহিনুর মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ।
মামলার আসামীরা হলো -নিহত ফারজানা ইয়াসমিন জেরিনের স্বামী শামীম মিয়া, তার ভাশুর তাঁতী লীগের আহবায়ক শাহিনুর মিয়া, শাহীনুরের স্ত্রী মনি বেগম, মা সালেহা বেগম।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানাযায়, গত ৩ বছর পূর্বে মাধবদীর আনন্দী গ্রামের আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে আমিরুল হাসান শামীমের সাথে বেলাব ভূইয়া বাড়ির জয়নাল আবেদিন ভূইয়া’র মেয়ে ফারজানা ইয়াসমিন জেরিনের বিয়ে হয়। সংসার জীবনে ইসান নামে তাদের দেড় বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। গতকাল রাতে যৌতুক দাবী করাকে কেন্দ্র করে স্বামী শামিমের সাথে জেরিনের ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে জেরিনকে মারপিট করা হয়। গলায় ওড়না পেচিয়ে জেরিন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে বলে শশুর বাড়ীর লোকজন গুজব ছড়ান। জেরিন গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে গেলে রাত ৩টার দিকে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পিতা ও মামলার বাদী জয়নাল আবেদিন ভূইয়া বলেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী শামীম যৌতুকের জন্য জেরিনকে নিযার্তন করত। মেয়ের সুখের কথা ভেবে এই পযর্ন্ত তার স্বামীকে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে জানতে পারলাম শামিমের অন্যের স্ত্রী’র সাথে পরকিয়া সর্ম্পক ছিল। বিষয়টি আমার মেয়ে জেনে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবেদ লেগেই থাকত। গেল শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে মেয়ের স্বামী শামীম আমাকে ফোন দেয়। তখন সে যৌতুক হিসেবে আরো ২ লক্ষ টাকা দেয়ার জন্য দাবী করেন। একই সাথে টাকা না দিলে মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে আমাকে হুমকি দেয়। তখন আমার মেয়েকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলি। একই সাথে আমার হাতে টাকা এলে মেয়ে ও টাকা এক সাথে নিয়ে যাওয়ার কথা বলি। এরই মধ্যে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় আমাকে মেয়ের শশুর বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে জানায় মেয়ে অবস্থা ভাল নয়। তাকে আমরা ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাচ্ছি। আপনারা আসেন। সকালে ঢাকা এসে দেখি আমার মেয়ে আর নেই। এই বিষয় নিয়ে শাহাবাগ থানায় একটি জিডি করেছি।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোঃ কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই যৌতুকের দাবীতে হত্যার একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে স্বামী ,ভাশুর তার স্ত্রী সহ ৪ জনকে আসামী করা হয়েছে। এর মধ্যে ভাশুর শাহীনকে শাহাবাগ থানা পুলিশ আটক করেছেন।