ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় আট কেজি স্বর্ণের বারসহ এক বিমান কর্মকর্তাকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। বিমানবন্দরের হ্যাংগারের সামনে থেকে রোববার রাত ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়। তার কোমরে লুকানো অবস্থায় ৬৮টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়, যার ওজন ৭ কেজি ৮৮৮ গ্রাম। এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের এপ্রোন সাইডে নজরদারি করছিল এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সাদা পোশাকের গোয়েন্দা দল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের কুয়ালালামপুর থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইট বিজি ৩৮৩ ঢাকায় অবতরণ করে। সব কার্যক্রম শেষে বিমানটি রাতে ০৯৩০ মিনিটে হ্যাংগারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং হ্যাংগারের সামনে পার্ক করে রাখা হয়।
তিনি জানান, বিমানের টেকনিশিয়ান, ক্লিনার এবং অন্য স্টাফরা তাদের কাজ শেষ করে একে একে বিমান ত্যাগ করলেও বিমানটির দিকে নজর রাখছিল এপিবিএন। বিমানের সব কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর রাত ১০টার দিকে যখন বিমানে আর কেউ ছিল না, তখন খুবই দ্রুততার সঙ্গে বিমানের এয়ারক্রাফট মেকানিক অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামকে বোয়িং ৭৭৭ মডেলের এই উড়োজাহাজে উঠতে দেখা যায়। তার চলাচলের ধরন এবং মুভমেন্ট দেখে সন্দেহ হয় এয়ারপোর্ট এপিবিএনের গোয়েন্দা দলের।
এপিবিএন কর্মকর্তা জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই যখন তিনি নেমে আসেন এবং দ্রুত স্থান ত্যাগের চেষ্টা করেন তখন তাকে আটক করা হয়। আটকের পর তাকে হ্যাংগারের সামনেই বিভিন্ন এজেন্সির উপস্থিতিতে তল্লাশি করা হয়। এ সময় তার কাছে ৬৮টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। এ সব স্বর্ণের বারের ব্যাপারে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল জানান, তিনি বিমানের ডগ বক্স থেকে এই স্বর্ণ সংগ্রহ করেন। কিন্তু এই স্বর্ণের গন্তব্য সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি সুস্পষ্ট কোনো তথ্য না জানিয়ে বিভিন্ন উদ্দেশ্যহীন কথাবার্তা বলতে থাকেন।
এপিবিএন কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার স্বর্ণের বাজারমূল্য ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৩৩ বছর বয়সী শফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালে ক্যাজুয়াল স্টাফ হিসেবে বিমানে যোগ দেন এবং ২০১৭ সালে স্থায়ী হন। তিনি খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।