শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

’চলচ্চিত্রের আরেক ছুটির ঘন্টা’ বিদ্যালয়ের টয়লেটে ১০ ঘন্টা আটকে ছিল স্কুল ছাত্রী

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ২৭ পাঠক
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার একটি স্কূলের টয়লেটে ১০ ঘন্টা আটকে থাকার পর বাক প্রতিবন্ধী এক স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে স্হানীয়রা । ঘটনাটি ঘটেছে শাহরাস্তি উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের হোসেনপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
এলাকাবাসী ও ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের মত স্কূলে আসে এসএসসি পরীক্ষার্থী বাক প্রতিবন্ধী শারমিন আক্তার, বিদ্যালয় ছুটির কিছুক্ষণ পূর্বে সে বিদ্যালয়ের টয়লেটে যায়।
এরমধ্যে ছুটির ঘন্টা বেজে উঠলে সকল শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে যায়, স্কুল ছুটির পর টয়লেটে কেউ আছে কিনা না দেখেইে বিদ্যালয়ের আয়া সাহানারা বেগম টয়লেটে তালা লাগিয়ে দেন। বাকপ্রতিবন্ধি হওয়ায় সকলের অজান্তে টয়লেটে আটকা পড়ে যায় শারমিন।
শারমিনের বাবা কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর হাজি বাড়ির আনোয়ার হোসেন তার মেয়ে বাড়িতে না আসায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিতে শুরু করেন, তিনি শারমিনের সহপাঠীদের বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।
শারমিনের মা হাসিনা বেগম মেয়েকে না পাওয়ার সংবাদ শুনে কুমিল্লা থেকে বাড়িতে চলে আসেন।
এদিকে রাত ১০টার পর পার্শবতী স্বর্ণকার পাড়ার আল আমিন স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনের আলোর মাধ্যমে টয়লেটের ভেন্টিলেটরে হাত দেখতে পায়ং সে ভয় পেয়ে তাৎক্ষণিক আশ পাশের কয়েকজন কে বিষয়টি অবহিত করেন।
পরে স্থানীয় বেশ কিছু এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে টয়লেটের তালা ভেঙে শারমিনকে উদ্ধার করে। শারমিনকে উদ্ধারের পর স্থানীয় ব্যাক্তি আবুল কাশেম তার বাড়িতে নিয়ে তাকে প্রাথমিক ভাবে সেবা দেন। উদ্ধারের পর শারমিনের বাবা কে সংবাদ দিলে তিনি ছুটে আসেন। অনেকেই এই ঘটনাকে ১৯৮০ সালে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র ছুটির ঘন্টার সাথে তুলনা করেছেন।
বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা জানান, বিদ্যালয় সাড়ে ১২টায় ছুটির পর তিনি ৪ টায় টয়লেটে তালা লাগিয়ে দেন তবে ভিতরে তিনি দেখেননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন জানান, বিদ্যালয় ছুটি হয় ১২টায় তবে দাপ্তরিক কাজ থাকায় তিনি সাড়ে ৪টায় শিক্ষকদের নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। বিদ্যালয়ের টয়লেটটি সামনে থাকলেও তিনি কোন কিছু আঁচ করতে পারেননি।
ময়েটিকে উদ্ধারের সময় তার মুখে রক্ত দেখতে পায় স্থানীয়রা।
শারমিনের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, তার মেয়ের বই পুস্তক শ্রেণী কক্ষেই ছিল কোন প্রকার না দেখেই তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে আটকে রাখা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানান, বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারো গাফিলতি পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহসান উল্লাহ চৌধুরী জানান, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব। এবিষয়ে স্থানীয় জনগণ বিদ্যালয়ের অবহেলা ও অসচেতনতাকেই দায়ী করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *