রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৪১ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবারে (২৬ জানুয়ার) দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অংগ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
অপপ্রচারকারীদের বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে সংবাদ সস্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ ইউসুফ গাজী। এসময় লিখিত পত্রে উল্লেখ করা হয়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ত্যাগ, ও সংগ্রামের লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে একজন সৎ ও সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশে বিদেশে পরিচিত ডাঃ দীপু মনিকে কী উদ্দেশ্যে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে তার মত একজন রাজনীতিবিদের সুনাম ও সম্মান নষ্ট করার জন্য অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে তা উদঘাটিত হওযা প্রয়োজন।
লিখিত বক্তব্যে আরো উল্যেখ্য করেন, বিগত ১৩ বছরে ডাঃ দীপু মনি এম.পি’ তার নির্বাচনী এলাকায় বহু সরকারি স্থাপনা নির্মিত হয়েছে এবং এ সকল স্থাপনার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চাঁদপুরে কোন অধিগ্রহণকৃত জমিতে কোথাও কখনো ডাঃ দীপু মনি বা তার পরিবারের কখনো কোন জমি ছিলো না। তার উদ্যোগে মেঘনার ভাঙন থেকে রক্ষায় চাঁদপুর হাইমচরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। যেখানে জমির মূল্য শতাংশ প্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়। সরকারের নিকট হতে ক্ষতিপূরণ লাভের আশায় বা অন্য কোন উদ্দেশ্যে সেখানেও ডাঃ দীপু মনি বা তার পরিবারের সদস্যরা কখনো কোন জমি ক্রয় করেননি।
গত ১৩ বছরে কোন নিয়োগে, কোন টি আর, কাবিখা বিতরণে, কোন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বা অন্য কোন কার্যক্রমে ডাঃ দীপু মনি বা তার পরিবারের সদস্যরা কোন ধরনের আর্থিক অস্বচ্ছতা বা অনিযম দিন ছিল না। এ বিষয়ে জেলার সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তাসহ জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ সবাই অবগত আছেন। কী উদ্দেশ্যে হঠাৎ করেই আজ ডাঃ দীপু মনিকে অসৎ প্রতিপন্ন করবার, হেয় করবার অপচেষ্টা করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে উল্যেখ্য করা হয়।
যে বা যারা কোন কোন গনমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডাঃ দীপু মনি বা তাঁর পরিবারকে জড়িয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করছে তাদের আসল উদ্দেশ্যে উদঘাটিত হওয়া অতীব জরুরী।
ডাঃ দীপু মনি ও তাঁর বড় ভাই কেউ কখনো কোন আর্থিক অনিয়ম বা দুর্নীতির সাথে কোনদিন জড়িত ছিলেন না বা নেই। তার নির্বাচনী এলাকায় গত ১৩ বছরে এম.পি হিসেবে তার সততা ও স্বচ্ছতা সর্বজন বিদিত।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত জমির মূল্য ইচ্ছাকৃতভাবে বৃদ্ধি করে বেশী মূল্যে জমি হস্তান্তরের ঘটনা যদি ঘটে থাকে তবে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে ডাঃ দীপু মনি মনে করেন।
জমির যথাযথ মূল্য না পাওয়ার আশংকায় জমির মালিকদের মধ্য থেকে ৩ জন হাইকোর্টে ২ টি রীট মামলা দায়ের করেন যা বর্তমানে আদালতের বিবেচনাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আলোচ্য বিষয়টি পদ্মা সেতুর কথিত দুর্নীতির অভিযোগের মতো একটি অভিযোগ-যেখানে অর্থ বরাদ্দ বা লেনদেন হয়নি, ক্রয়-বিক্রয় হয়নি সেখানে দুর্নীতি হয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
জমি অধিগ্রহনে জেলা প্রশাসন কর্তৃক দুটি প্রাক্কলণই প্রস্তুত করা হয়। জেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রথম প্রাক্কলণকৃত মূল্য ৫৫৩ কোটি টাকা যা জমির মূল্য বাড়িয়ে দেয়ার কারণে ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। একইসাথে বলা হচ্ছে পূর্ববর্তী প্রাক্কলণে বাজার মূল্যের ২০ গুন বেশী দাম ধরা হয়েছিল। ১৯৩ কোটি টাকার ২০ গুন গণিতের কোন নিয়মে ৫৫৩ কোটি টাকা হয় তাও বোধগম্য নয়। এবং ঠিক কি কারণে একই কর্তৃপক্ষ একই জমির জন্য কিছুদিনের ব্যবধানে দুটি প্রাক্কলণ কেন প্রণয়ন করলো এবং যার মধ্যে মূল্যে এত পার্থক্য হলো তাও জানা প্রয়োজন। ডাঃ দীপু মনি’র চাঁদপুর জেলার কোথাও ক্রয়সূত্রে কোন জমির মালিকানা নেই। অর্থাৎ তিনি কখনোই চাঁদপুরে কোন জমি ক্রয় করেননি। ডাঃ দীপু মনি এম.পি এর পরিবারের কোন সদস্যের কোন জমি উক্ত অধিগ্রহণ এলাকায় নেই । কাজেই জমির মূল্য থেকে তাদের লাভবান হবার বা অনৈতিক কোন সুবিধা গ্রহণেরও কোন প্রশ্ন উঠতে পারেনা।
আরো উল্লেখ্য যে, চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ বিদেশ থেকে নিয়ন্ত্রিত কানাডা ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টালে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তাহা রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণবশত বক্তব্য। জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হিসেবে তিনি এধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না। বিদেশ থেকে যারা দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো কানাডা ভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টালে তার এই বক্তব্য দেশ ও সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের সামিল। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সরকারের মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক নগ্ন অপপ্রচারকে উসকে দিয়ে তিনি প্রকৃতপক্ষে সরকার ও দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে আমরা মনে করি।
এরপর উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নেতৃবৃন্দ। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের পরিচালনায় উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শহীদ পাটওয়ারী, শরীফ চৌধরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, এ এইচ এমআহসান উল্ল্যা, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি আল ইমরান শোভন, সাধারণ সম্পাদক কাদের পলাশ, সাংবাদিক শাহাদত হোসেন শান্ত, ইব্রাহিম রনি, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কে এম মাসুদ, সাংবাদিক তালহা জুবায়ের, মিজান লিটন, বোরহান উদ্দিন ডালিম প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, উপ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিৎ রায় চৌধরী, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আলম মিল্টন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক আলী আরশ্বাদ মিয়াজী, পৌর আওয়ামীলেিগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী অধ্যাপিকা মাসুদা নূর, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুর রহামন টুটুল উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়রগনসহ কাউন্তিলররা উপস্থিত ছিলেন।