রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

ইউক্রেনকে আরেক ইসরায়েল বানাবেন তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: / ৩৪ পাঠক
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

রুশ সামরিক হামলার প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনকে দখলদার ইসরায়েলের আদলে গড়ে তুলতে চান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুইজারল্যান্ড নয়; ইসরায়েলের মডেলে গড়ে তোলা হবে। চলমান রুশ সামরিক অভিযানের মধ্যে মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) এক বক্তব্যে এ কথা বলেন জেলেনস্কি। খবর জেরুজালেম পোস্ট।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান চলছে। এর মধ্যদিয়ে ইউক্রেনকে অসামরিকীকরণ করে সুইজারল্যান্ডের মতো নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় মস্কো। কিন্তু জেলেনস্কি রাশিয়ার এই পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে চান।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ শেষের পর জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে জোর দেবে ইউক্রেন। এক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ড মডেল নয়, বরং ইসরায়েলের মতো নিজেকে সাজাবে ইউক্রেন।

জেলেনস্কির ভাষায়, ‘আমি মনে করি, আমাদের দেশের সব লোকই হবে এক বিশাল সেনাবাহিনীর অংশ। আমরা আর ‘সুইজারল্যান্ড মডেল’ নিয়ে কথা বলব না। আমাদের দেশ অবশ্যই ‘একটি বিশাল ইসরাইল’ হয়ে উঠবে।’

জেলেনস্কির এই মন্তব্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সমস্ত প্রতিষ্ঠান, সুপারমার্কেট, সিনেমায় সশস্ত্র বাহিনী বা ন্যাশনাল গার্ডের প্রতিনিধি থাকবে। সেখানে অস্ত্রধারী মানুষ থাকবে। আমি নিশ্চিত আগামী ১০ বছর নিরাপত্তাই হবে আমাদের এক নম্বর ইস্যু।’

জেলেনস্কির পরিকল্পনা, ইউক্রেনকে নিরাপত্তাদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য কয়েকটি দেশ থাকবে, যারা ভবিষ্যতে রুশ সামরিক অভিযানের ক্ষেত্রে কোনো শর্ত ছাড়াই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে এবং তিন দিনের মধ্যে রাশিয়ার সব কিছু বন্ধ করে দেবে।

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, তুরস্ক, পোল্যান্ড, ইতালি ও ইসরায়েলের সঙ্গে উপদেষ্টা ও উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

ইসরায়েলের আইন অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকদের অন্তত দুই বছরের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয়। দেশটির সাধারণ মানুষের জনসমাগমের জায়গাগুলোতে সশস্ত্র বেসামরিক ও সেনা মোতায়েন দেখা যায়। এছাড়া দেশটির সরকার নিয়মিতভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করে থাকে।

ইহুদি ধর্মাবলম্বী জেলেনস্কি বেশ কয়েকবারই জোর দিয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলেছেন। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর পরই ছুটে যান পৈতৃক বাড়ি ক্রিভি রিহতে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর কাছে নাৎসি জার্মানির আত্মসমর্পণের দিনকে স্মরণ করে উদযাপিত ভিক্টরি ডেতে (৯ মে) দাদার কবরে শ্রদ্ধা জানান। হলোকাস্ট দিবস উদযাপনে ১৯২১ সালে ইসরাইল সফরেও যান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

জেলেনস্কির বেশির ভাগ আত্মীয়-স্বজনই থাকেন ইসরায়েলে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর ইউক্রেন ছেড়ে চলে যান তারা। এসব যোগসূত্রেই রুশ অভিযানের প্রেক্ষিতে জেলেনস্কির সবচেয়ে বেশি সমর্থন দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *