রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন

বাঘায় চিনি দিয়ে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড়!

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ২৭ পাঠক
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন

নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শনিবার,২০ জানুয়ারী ২০১৮: বেশি মুনাফার আশায় চিনি মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল খেজুর গুড় রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। প্রতিদিন ট্রাক ট্রাক চিনি মেশানো হচ্ছে এই খেজুর গুড়ে। কেউ কেউ চিনির পাশা-পাশি ময়দাও মেশাচ্ছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার ২টি পৌরসভা বাঘা ও আড়ানী এবং ৭টি ইউনিয়নের বাজু বাঘা, দাদপুর গড়গড়ী, চকরাজাপুর, পাকুড়িয়া, মনিগ্রাম, বাউসা, আড়ানীসহ প্রতিটি গ্রামে উৎপাদিত সুমিষ্ট খেজুরের গুড়ের সুনাম থাকায় দেদারছে চিনি মিশিয়ে খেজুরের গুড় তৈরি করা হচ্ছে। মুনাফালোভী চাষিরা খেজুর রসের সঙ্গে চিনি, ময়দা ও হাইড্রোজ মিশিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারজাত করছে। আর এসব গুড় ছড়িয়ে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র। ঠকছে ক্রেতারা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গুড়ের চেয়ে চিনি ও ময়দার দাম কম হওয়ায় খেজুর গুড়ে চিনি মেশাচ্ছেন গুড় প্রস্তুতকারী চাষিরা। ভোরবেলা গাছ থেকে খেজুররস সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে এসে কড়াইয়ে রস জাল করে লালচে বর্ণের হলেই চিনি ও ময়দা ঢেলে দেয় কড়াইয়ে। তারপর একটু জাল দিলেই চিনি ও ময়দা গুলিয়ে রসের সঙ্গে মিশে তৈরি হচ্ছে গুড়।

খেজুর রসের সমপরিমাণ চিনি ও ময়দা মেশানো হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি চিনির দাম ৫০-৫২ টাকা, প্রতিকেজি ময়দার দাম ২৫-২৬ টাকা আর গুড় বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। গুড়ে চিনি ও ময়দা মিশিয়ে চাষিরা প্রতিকেজি গুড়ে পাচ্ছে অতিরিক্ত ৫-১০ টাকা বেশি। কোন কোন সময় গুড়ের দাম আরো বৃদ্ধি পায়। তখন প্রতি কেজি গুড়ে অতিরিক্ত লাভ হয় ১৫-২০ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাছি বলেন, রস জাল করে লালচে বর্ণের হলেই চিনি ও ময়দা মিশিয়ে দেয়া হয়। চিনি গলে গেলে ময়দা, হাইড্রোজ, ফিটকারিতে রস গাড়ো হয়ে গুড়ের রং হয় উজ্জ্বল। চিনি, ময়দা, হাইড্রোজ, ফিটকিরি মিশ্রিত গুড় দেখতে চকচকে ও অনেক সুন্দর লাগে। সে কারণে বাজারে চাহিদাও অনেক বেশি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে প্রতিটি গ্রামের চাষীরা একইভাবে গুড় তৈরি করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের আমদানি হওয়া খেজুর গুড়ের ৯৮ ভাগই চিনি ও ময়দা মিশ্রিত গুড়।

বাঘা উপজেলার গুড় ব্যাবসায়ী জালাল জানান, বর্তমানে হাট-বাজারে আমদানি খেজুর গুড়ের সিংহ ভাগই চিনি মিশ্রিত ভেজাল গুড়। আমরা কেনার সময় টের পেলেও কিছু করার থাকে না। কারণ চিনি মিশ্রিত ব্যতিত স্বচ্ছ খেজুর রসের তৈরি গুড় পাওয়া এখন দুষ্কর।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, খেজুর রসের সঙ্গে চিনি, ময়দা ও অন্যান্য উপকরণ মেশানো হচ্ছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই চিনি মিশ্রিত ভেজাল গুড় দিয়ে কোন খাদ্যদ্রব্য তৈরি করে খেলে মানবদেহের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিকারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এর ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ভেজাল বিরোধী অভিযান চালানো হবে তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *