শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

সন্তানদের বলেছি, সম্পদ দিতে পারব না: শেখ হাসিনা

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩৩ পাঠক
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক, বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, রবিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮: ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল উত্তরাধিকার সূত্রে কোনো সম্পদ পাবেন না-এই বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তাদের মা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর আরেক মেয়ে শেখ রেহানাও তার সন্তানদেরও একই কথা জানিয়েছেন।

রবিবার রাজধানীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত এক শিক্ষক সমাবেশে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট, বরিশাল, রংপুর ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কেন্দ্রসহ মোট ১১টি ভবন ও প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এছাড়া দেশের সাতটি সেরা কলেজকে সম্মাননাও দেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকারের শেষ বছর নানা দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন সরকারকে যে চাপ দিয়ে যাচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি একটি নীতিমালার ভিত্তিতে দেশ চালান, শেষ বছর বলে অযৌক্তিক বিষয়ে চাপ দিয়ে কেউ কিছু আদায় করতে পারবে না।

সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য কোনো সম্পদ রেখে যাবেন না জনিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের লেখা পড়া শিখিয়ে বলে দিয়েছি, কোনো সম্পত্তি দিতে পারব না। একটাই সম্পদ, সেটা হলো তোমাদের লেখাপড়া, শিক্ষা। সেটার চেয়ে বড় সম্পদ আর কিছু না।’

কারণ, শিক্ষা এমন একটা সম্পদ, কেউ চুরিও করতে পারবে না, ডাকাতিও করতে পারবে না, ছিনতাইও করতে পারবে না. কেড়ে নিতে পারবে না, তার বিরুদ্ধে মামলাও দিতে পারব না, কিছুই করতে পারবে না।

নিজের এবং বোন শেখ রেহানার সন্তানদের বিষয়টি তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘গর্বের সঙ্গে এটুকু বলতে পারি বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আর রেহানার ছেলে মেয়েরা পড়েছে।’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় মায়ের সঙ্গে জার্মানি-লন্ডন হয়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। তাঁর শৈশব এবং কৈশোর কেটেছে সে দেশেই। নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ হতে স্নাতক করার পর যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এ্যট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক করেছেন তিনি। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক-প্রশাসন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করেন জয়।

অন্যদিকে শেখ হাসিনার মেয় সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক, ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি এবং ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার একাডেমি অব সায়েন্স কর্তৃক শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত হয়।

আর শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস্ থেকে লেখাপড়া করা জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপির একজন পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।

দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিক্স, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন।

আরেক মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকি রুপন্তিও যুক্তরাজ্যে লেখাপড়া করেছেন।

নিজের দুই সন্তান ও তিন ভাগ্নে, ভাগ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ কীভাবে যোগাড় হয়েছে, সেটাও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘আমরা হয়ত সেভাবে সাহায্য করতে পারিনি, তারা চাকরি করেছে, পড়েছে আবার গ্যাপ দিয়েছে কিছুদিন, আবার চাকরি করেছে, লোন দিয়েছে তারা, লোন নিয়ে পড়াশোনা করেছে, আবার চাকরি করে সেটা পরিশোধ করেছে, আবার পড়েছে, এভাবেই কিন্তু তারা নিজেদের বলে দিয়েছে।’

‘আমার বাবা-বন্ধুবান্ধব কিছু সাহায্য করেছিলেন প্রাথমিকভাবে, সে জন্যই আমরা কিন্তু তাদের শিক্ষা দিতে পেরেছি।’

বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি নিজেদের জন্য না রেখে জনকল্যাণে দেয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক নেতার ছেলে মেয়ের মধ্যে আমরা দুই বোনই যে সম্পদ উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা পেয়েছি, ওই ধানমণ্ডির বাড়ি, সেটা আমরা জনগণকে দান করে দিয়েছি।’

‘আমরা ট্রাস্ট ফান্ড করে এই দেশের ছেলে মেয়ে, তাদের শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করতে তাদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’

‘আমরা কিন্তু নিজেরা কোনো সম্পদ গড়তে আসিনি, জনগণ উন্নত জীবন পাক, জনগণের সম্পদ হোক, জনগণ ভালো থাকুক, জনগণের কল্যাণ হোক, সে নীতি নিয়েই কিন্তু আমার রাজনীতি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *