রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

জাহালমের বিষয়ে দায় দুদককে নিতেই হবে: হাইকোর্ট

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩৯ পাঠক
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৪ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক | বর্তমানকণ্ঠ ডটকম:
সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতিসংক্রান্ত মামলার শুনানিতে জাহালমের বিষয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় কতজন ব্যাংক অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে? আমরা সব দেখব। দুদক যখন জানতে পারল জাহালম নির্দোষ, তখন তাঁর জামিন করানো উচিত ছিল। এর দায় দুদককে নিতেই হবে।’

একই সঙ্গে এই ঋণ জালিয়াতিসংক্রান্ত ৩৩টি মামলার সব কাগজপত্র দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

দুদকের মামলায় নিরীহ জাহালমের কারাভোগসংক্রান্ত মামলার শুনানি নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত আগামী ১০ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেন।

এ মামলায় দুদকের পক্ষে হলফনামা জমা দেন আইনজীবী খুরশীদ আলম। তিনি শুনানিতে সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির মামলায় জাহালমকে কীভাবে ২৬ মামলার আসামি করা হয়, আবার দুদকের অধিকতর তদন্তে জাহালম কীভাবে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন—এসব ব্যাপারে হলফনামা থেকে আদালতকে পড়ে শোনান।

শুনানির একপর্যায়ে দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘দুদককে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সুপারিশের মধ্যে না থেকে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দুদক একটা জাতীয় প্রতিষ্ঠান। দুদক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা হোক, তা আমরা চাই না। কিন্তু দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আগে দুর্নীতিবাজদের মানুষ ঘৃণা করত। আমাদের নৈতিক অধঃপতন হয়েছে।’

দুদকের এই আইনজীবী আদালতকে জানান, সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতিসংক্রান্ত মামলাগুলোর অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন বিচারিক আদালতে জমা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জাহালমের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ প্রত্যাহার চেয়েও বিচারিক আদালতে আবেদন করা হয়। খুরশীদ আলম হলফনামা থেকে তথ্য তুলে ধরে আদালতকে বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সাক্ষীরা জাহালমকে সালেক বলে শনাক্ত করেন। তবে অধিকতর তদন্তে জানা যায়, প্রকৃত আসামি সালেকের বাড়ি ঠাকুরগাঁও।

এ সময় আদালত খুরশীদ আলমের কাছে জানতে চান, ‘কবে আপনারা জানলেন জাহালম নির্দোষ আর কবে আদালতে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলেন?’ তখন খুরশীদ আলম খান জানান, অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন তিনি আদালতে নিয়ে এসেছেন। এগুলো সবই তিনি আদালতে জমা দেবেন। আদালত তখন দুদকের এই আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘যখন আপনারা জানতে পারলেন জাহালম নির্দোষ, তখন আপনাদের উচিত ছিল জাহালমের জামিনের ব্যবস্থা করা। জাহালম বলে আসছেন, তিনি নির্দোষ। পিপিরা জানলেন কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর দায় আপনাদের নিতেই হবে।’

দুদকের আইনজীবী আদালতকে বলেন, জাহালমকে যে ২৬ মামলার আসামি করা হয়, সে–সংক্রান্ত সব কাগজপত্র তিনি আদালতে জমা দেবেন। আদালত তখন বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনার ৩৩টি মামলার সব কাগজপত্র আদালতে জমা দেবেন। আমরা সব দেখব।’

এ ব্যাপারে আদালত দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে ১৮টি ব্যাংক। ১৮টি ব্যাংককে পার্টি করবেন। ১৮টি ব্যাংকের কাগজপত্র জমা দেবেন।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় কতজন ব্যাংক অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন? আমরা তা দেখব। যাকে আসামি করা উচিত ছিল, তাকে সাক্ষী করেছেন। আদালত দুদকের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কবে এসব কাগজপত্র জমা দেবেন?’ তখন খুরশীদ আলম খান চার সপ্তাহ সময় দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত আগামী ১০ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *