শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০১ অপরাহ্ন

সিবিআই`র আহবান বাংলাদেশে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করে পূনর্বাসনের ব্যবস্হা করুন

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৬৫ পাঠক
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০১ অপরাহ্ন

হাকিকুল ইসলাম খোকন – নিউইয়র্ক, বুলবুল তালুকদার – অষ্ট্রিয়া, নাজিম চৌধূরী – লন্ডন, বর্তমানকন্ঠ ডটকম : কোভিড – ১৯ তথা করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে বিশ্ব পরিস্থিতি এখন টালমাটাল।এই অদৃশ্য ভাইরাসের প্রভাবে সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা সহ বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশী’রা কর্মহীন ও বেকার।করুণ অবস্থা তাদের পরিবারের।বিভিন্ন দেশ ও দূতাবাস থেকে নানা ধরনের শোচনীয় তথ্য ও খবরকে কেন্দ্র করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৫ এপ্রিল রোববার প্রবাসীদের দূর্যোগময় মুহুর্তে পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্মরণকালের সবচাইতে বড় আন্ত:মন্ত্রণালয় সমন্বয় সভায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও সচিবগণ উপস্হিত ছিলেন। বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারের নানা অশনি সংকেত ও বিষয় নিয়ে আলোচনার বিষয়টি ফেজবুক, টুইটার, ইউটিউব সহ নানা মাধ্যমে কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অবহিত হয়। বিভিন্ন দেশে বৈধ অবৈধ অনিয়মিত যাঁরা চাকরী হারিয়েছেন, মানবেতর জীবনযাপন করছেন, থাকা খাওয়া, চিকিৎসার সমস্যায় আছেন-তাঁদেরকে ইতিমধ্যেই সাহায্য পাঠানোর বিষয়টি জানানো হয়। আরো সাহায্য পাঠানো দরকার বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্হান মন্ত্রী পর্যায়ের সভায় গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। বিভিন্ন কারণে অনিয়মিত ও অবৈধদের দেশে ফেরত নিয়ে আসার বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে আলোচনার জন্য ‘কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল’ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

তবে, বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া প্রবাসী ও অভিবাসীদের হয়রানি না করা এবং যথাযথ উপায়ে প্রত্যাবর্তনকারী প্রবাসীদের পূনর্বাসন করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্ববান জানিয়েছেন “কানেক্ট বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল (সিবিআই)”।

সিবিআই নেতৃবৃন্দ মনে করেন – বিশ্বে এখন সবচাইতে বড় আতংকের, সহস্র বছরের বড় অথচ অদৃশ্য ট্র্যাজেডীর নাম “করোনা ভাইরাস”। শুধু বাংলাদেশ নয়-আমেরিকা, ইউরোপ সহ বিশ্বের বড় বড় দেশগুলিও ভীত সন্ত্রস্ত। ঘোর অমানিশা’র নিকশ কালো অন্ধকার। আলোর সন্ধান এখনো নেই। নিস্তব্ধতায় মোড়া চারপাশ। চারিদিকে হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস। এমতাবস্থায় দেশে ফিরে যাওয়া রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসাবে পরিচিত প্রবাসী ও অভিবাসীরা নিজ জন্মভূমিতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন খবরে প্রকাশ। যা কখনও কাম্য নয় বলে সিবিআই মনে করে। এইসব প্রবাসী ও অভিবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ প্রদর্শন করার জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সিবিআই উদাত্ত আহ্ববান জানান।

তাঁরা আরও বলেন, প্রবাসীগন দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে সকল তথ্য এবং সেবার বিষয়ে সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একান্ত আবেদন জানানো হয়, অভিবাসী ও প্রবাসীরা যাতে নিরাপদে তাঁদের বাড়িতে যেতে পারেন ও থাকতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য।

বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, “সাম্প্রতিক দিনগুলিতে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পরে স্বল্প সংখ্যক প্রবাসীগন বাংলাদেশে ফিরে গিয়েছিলেন। তবে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, (সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত খবর) প্রবাসীগনকে বিদেশ থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রামক দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হচ্ছে। দুর্ভাগ্যক্রমে এধরনের প্রচারণায় উদ্ভূদ্ধ বা প্রতারকদের প্ররোচনার মাধ্যমে প্রবাসী ও অভিবাসীদের হয়রানি, অপমান, শারীরিক ভাবে নির্যাতন করার খবর যদি সত্য হয়-তবে তা দূ:খজনক, অপমানজনক।

এমতাবস্থায় প্রবাসী ও অভিবাসীগনকে হয়রানি না করে মানবিক আচরণ এবং সহানুভূতির সাথে তাঁদের দেখার ও আচরণের জন্য সিবিআই সনির্বন্ধ অনুরোধ জানান।

সিবিআই নেতৃবন্দ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া, সংবাদপত্র, আন্তর্জাতিক গনমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদের প্রেক্ষিতে এই মহাদূর্যোগে বিজেএমই কর্তৃককে প্রয়োজনীয় প্রণোদনা প্রদানের পরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করে যেভাবে হাজারো পোশাক শিল্প শ্রমিকরা শতমাইল পায়ে হেঁটে মিছিল করে কাজে যোগদান করেছে, বিষয়টি নিয়ে সারা বিশ্ব স্তম্ভিত! এ কি করে সম্ভব! বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার ত্বরান্বিত করার দাবী জানান তারা।

উল্লেখ্য, গণমাধ্যম, সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায় যে, পোষাক শিল্প মালিকদের অনেকেই সাংসদ, মন্ত্রী, মেয়র ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত। পত্রপত্রিকায় অসাধু পোষাকশিল্প মালিকদের বিদেশে অর্থ পাচারের কাহিনীও আলোচিত সমালোচিত। এমতাবস্থায় পোষাক শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের মতো প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধারাও দেশ ও জাতির মহামূল্যবান সম্পদ। প্রবাসী ও অভিবাসীগন কখনো রাষ্ট্র ও সমাজের বোঝা ছিলোনা। প্রবাসীগন মনে করেন যে, রাষ্ট্র আমাকে কি দেবে সেটা বড় কথা নয়-আমি রাষ্ট্রকে কি দিয়েছি এবং দেবো-সেটিই আসল কথা।

তাই কোভিড-১৯’কে কেন্দ্র করে আশু ভয়াবহ আর্থ-সামাজিক মহাসংকটকালীন মুহুর্তে দোষারূপের সংস্কৃতি পরিহার করে ১৯৭১’সালের মতো প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধাসহ সরকারী ও বিরোধী দল সহকারে সর্বস্তরের এবং সর্বসাধারণের সমন্বয়ে জাতি ও দেশকে রক্ষা করার ইস্পাত কঠিন প্রত্যয় ও প্রত্যাশাকে সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সৃষ্টির আশায় আশাবাদী হওয়া ব্যতিত অন্য কোন গত্যন্তর নেই বলে সিবিআই নেতৃবন্দ মনে করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *