শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন

সবার জন্য বিদ্যুৎ: প্রতিবছর প্রয়োজন ১২-৪০ বিলিয়ন ডলার

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ২৯ পাঠক
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,বুধবার ২২ নভেম্বর ২০১৭: এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে। সার্বজনীন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এ খাতে প্রতিবছর ১২ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন। ইউনাইটেড নেশন কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ইউএনসিটিএডি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ইউএনসিটিএডির ওই প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

অনুষ্ঠানে ইউএনসিটিএডির প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। ‘দ্য লিস্ট ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিজ রিপোর্ট-২০১৭: ট্রান্সফরমেশনাল এনার্জি একসেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে গৃহস্থালীর কাজে ৬৬ শতাংশ গ্যাস, শিল্পখাতে ১৫ শতাংশ, বাণিজ্যিকখাতে ২ শতাংশ, কৃষিতে ৩ শতাংশ ও পরিবহনে ১৩ শতাংশ গ্যাস ব্যবহার হয়। কিন্তু বাংলাদেশকে ২০৩০ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত হতে হলে জ্বালানির ব্যবহার শিল্পখাতে বাড়াতে হবে।

জ্বালানির বিষয়ে সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত আয়ের দেশে পৌঁছাতে অবশ্যই জ্বালানি খাতে উন্নয়ন জরুরি। এছাড়া উৎপাদনশীলখাতে জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এই জন্য সুশাসন, ও বড় বিনিয়োগ দরকার। তবে রাষ্ট্রের একার পক্ষে বিনিয়োগ সম্ভব নয়।’ বেসরকারিখাতকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মতামত দেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক তহবিলগুলো থেকে অর্থ আনার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের বড় শিকার বাংলাদেশ। এই জন্য উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে অর্থছাড় নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে এখনও প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতের বাইরে রয়ে গেছে। যেখানে আফ্রিকার দেশগুলোতে এই হার ৫০ শতাংশ।’

তবে বিদ্যুতের উৎপাদন অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে সিপিডির এই গবেষণা পরিচালক বলেন, ‘উৎপাদন বাড়লেও এখন পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। বিদ্যুৎকে উৎপাদনশীলতার কাজে লাগানোর জন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।’

ইউএনসিটিএডির প্রতিবেদনে সুপারিশ করে বলা হয় বিদ্যুতের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সক্ষমতা বলতে বাস্তবসম্মত নীতিমালার আলোকে বিদ্যুত উৎপাদন থেকে শুরু করে বিতরণ ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। বাড়াতে হবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয় সুশাসন নিশ্চিত ও অর্থায়নে স্বচ্ছতা আনতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে বিশাল বিনিয়োগের দরকার। এই জন্য সুশাসন নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সর্বজনীন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এ খাতে প্রতিবছর ১২ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন। তাহলেই ২০৩০ সাল নাগাদ মধ্য আয়ের দেশ গড়ার যে স্বপ্ন তা পূরণ করা সম্ভব হবে। তবে অর্থায়নের জন্য শুধু রাষ্ট্র্রের উপর নির্ভরশীল না হয়ে বৈদেশিক ও ব্যক্তিখাতের বিনেয়োগের দিকে এগুতে হবে।

জ্বালানি ও উন্নয়নের নীতিমালার সাথে সংযোগ স্থাপন: মধ্য আয়ের দেশ গড়তে মুখ্য ভূমিকা রাখবে জ্বালানি। সেজন্য এর ব্যবহারের সঙ্গে শিল্পের সংযোগ তৈরি করতে হবে। দেশে মোট জ্বালানির ৬৫ শতাংশ গৃহস্থালীর কাজে ব্যবহার হচ্ছে। এখন গৃহস্থালীর সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানিকে শিল্পমুখী করতে হবে।

এছাড়া সার্বজনীন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। এতে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সর্বস্তরে পৌঁছানো সম্ভব হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে গ্রামীণ পর্যায়ে সবচেয়ে কম মানুষ বিদ্যুৎ পেয়ে থাকে। এখন শহর থেকে বিদ্যুৎকে গ্রামমুখী করার সময় এসেছে বলে সুপারিশ করা হয় প্রতিবেদনে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *