শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

হৃদির কষ্টে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে

মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা / ৭১ পাঠক
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

‘আমার বাবাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি।’ছোট মেয়ে হৃদি ‘ আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ ‘ উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তার মায়ের সাথে মানববন্ধনে এসে শুধু কান্না ছাড়া কোনো কথাই বলতে পারেনি।অনুষ্ঠান শেষে মায়ের হাত ধরে বাসায় ফিরে গেলেও হৃদির মুখে আর হাসি ফোটে নি।প্রচন্ড জ্বর ও অসুস্থতা নিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে।হৃদির মা ফারজানা হৃদির জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। হৃদির বাবা যদি এখন হৃদির পাশে থাকত, তাহলে এতদিন সে কোনোভাবেই অসুস্থ থাকতে পারত না।গত ৮ বছর বাবার শূন্যতায় হৃদি ও তার ছোট ভাই মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, হৃদির মা ফারজানা মহামারী করোনা আসার আগে আমাকে মাঝে মাঝে ফোন দিলেও গত দুই বছরে কোনো ফোন দেয়নি।হঠাৎ ফেসবুকে হৃদির একটি অসুস্থতার ছবি দিয়ে বললো, ‘ভাই হৃদির জন্য দোয়া করবেন।’হৃদির ছবিটি দেখে কান্নায় চোখ ছলছল করছিল, ওর এখন বেঁড়ে উঠার সময়। জানি না কীভাবে ওর মা ওদেরকে মানুষ করছেন, উদাসীন বিএনপি শুধু ক্ষমতায় যেতে চায়, যে বিএনপি করতে গিয়ে হৃদি,মীম, আহাদ, আরোয়ারা বঞ্চিত রয়েছে বাবার আদর সোহাগ ও ভালোবাসা থেকে।খিলখাঁও এর নহর পৃথিবীতে আসার আগেই তার বাবা নরুজ্জামান জনিকে হারিয়েছে।

অথচ আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহে ‘মায়ের ডাক’ ও বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি, অধিকার সহ বিভিন্ন সংগঠন স্বজনদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন ও নানা কর্মসূচি পালন করলেও বিএনপি একটি বিবৃতি দিয়েই নিজেদেরকে উদ্ধার করেছে।এইতো কদিন আগে ড্রাইভার কাওছারের মেয়ে লামিয়া মীমের হাত কেঁটে আটটি সেলাই লেগেছিল, সে ও তার মা ” মায়ের ডাক” এর মানববন্ধনে এসে শিশু মীম বলেছিল, ‘আমার হাত কেঁটে কত রক্ত পড়েছে, কতগুলো সেলাই দিয়েছি, বাবা থাকলে এত কষ্ট হত না ‘।

গুম পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের হৃদয় থেকে রক্ত ঝরছে এখন শুধু তাদের অপেক্ষা, অপেক্ষা আর অপেক্ষা। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরে মহান জাতীয় সংসদে আজ ৫০ তম বাজেট পেশ করা হবে। ইতিপূর্বে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির পক্ষ থেকে বাজেটে গুম হওয়া পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ বরাদ্ধের দাবি জানানো হয়েছে।আশা করব, এ বিষয়ে রাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ত্রান নয়, ভিক্ষা নয়, সাংবিধানিক অধিকার চাই।আর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রশ্ন শুধু ঈদ আসলেই ওদের পাশে দাঁড়াবেন আর ফটোসেশন করবেন এটি অত্যন্ত লজ্জার ও কষ্টের। হৃদিদের জন্য আমাদের হৃদয়ে অনেক রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ যেন কাঁদছে মানবতা, কাঁদছে বাংলাদেশ। হৃদি মামনি তুমি সুস্থ হয়ে উঠো, তোমার জন্য রইল অনেক দোয়া ও ভালোবাসা।

লেখক – চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *