নিউজ ডেস্ক । বর্তমানকণ্ঠ ডটকম-
আওয়ামী লীগের ২১ তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী মার্চ মাস থেকে জোরালো প্রস্তুতি নিতে দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ডাকসু নির্বাচনের দায়িত্বপপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতারা গণভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি ওই নেতাদের মৌখিকভাবে জানিয়ে দেন। গণভবনে উপস্থিত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান। এছাড়া আরও কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনার ধারাবাহিকতায় গতকালের মতো বুধবারও গণভবনে যান দায়িত্বশীল নেতারা। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আলাপচারিতার একপর্যায়ে জার্মানি সফরে যাওয়ার আগে খোশমেজাজে থাকা প্রধানমন্ত্রী ২১তম জাতীয় সম্মেলন নিয়ে কথা তোলেন। তিনি সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার নেতাদের কিছু নির্দেশনা দেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি এ সময় দলের এই শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি চাই, যথা সময়ে সম্মেলন হোক, দলকে গতিশীল করতে যথাসময়ে সম্মেলন দরকার। সম্মেলনের মাধ্যমে দলটাকে আমি গুছিয়ে যেতে চাই। আওয়ামী লীগের একটি ইতিহাস আছে, সংগঠন হিসেবে ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে। সংগঠনকে আমি আরও সুন্দরভাবে গোছাতে চাই। বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের জন্য সংগঠনকে আরও জনপ্রিয় ও শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নিতে চাই। আগামী মার্চ থেকে সংগঠনের সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
এ লক্ষ্যে শেখ হাসিনা জার্মানি সফর শেষে দেশে ফিরে দলের শীর্ষ নেতাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আরও নির্দেশনা ও কর্মপরিকল্পনা জানিয়ে দেবেন বলেও উল্লেখ করেন।
এছাড়াও ওই সময় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে পরামর্শের ধাররাবাহিকতা আজও রাতে গণভবনে ডাকসুর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আলোচনা করতে যান। গতকাল রাতেও গণভবনে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে দেখা করে পরামর্শ ও পরিকল্পনা নির্ধারণ করেন এই নেতারা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান দলীয় সভাপতির সম্মলনের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘মাননীয় নেত্রী সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি আমাদেরকে যথা সময়ে সম্মেলন হওয়া দরকার বলে জানিয়ে দিয়েছেন।’
তিনি বলেছেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে দলটাকে আমি গুছিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস আছে, সংগঠন হিসাবে একটা ইতিহাস আছে, ঐতিহ্য আছে। সংগঠনকে আমি আরও সুন্দরভাবে গুছাতে চাই। বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের জন্য সংগঠনকে আরও সুন্দর শক্তিশালী ও জনপ্রিয় করতে উদ্যোগ নিতে চাই। তাই আগামী মার্চ থেকে সংগঠনের সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
দলীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী মার্চের পর তৃণমূল আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে উপজেলা, জেলা ও মহানগর সম্মেলন করার দিকে জোর দেবে দলটি। এরপর কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হবে। সম্মেলনের তিন বছর মেয়াদপূর্তির বছরে সংসদ নির্বাচন, মন্ত্রিসভা এবং সংরক্ষিত নারী আসনের মতোই ব্যাপক চমক থাকবে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে এমনটাই ধারণা করছেন দলীয় নেতারা।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আইইবিতে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে পুনরায় আওয়ামী লীগ সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আগামী সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসবে কি না- এ নিয়েও শুরু হয়েছে জোর আলোচনা। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ পদে আরেক দফা থাকছেন, না নতুন মুখ আসছে- তা নিয়েও দলের ভেতরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা আওয়ামী লীগের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও একইপদে এক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আলোচনায় রয়েছেন।