বর্তমানকণ্ঠ ডটকম-
৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮ বাংলা সন, এই দিনটিতে উর্দু ভাষা ছিন্ন করে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের বিলুপ্ততার সপ্নাবেশে ছাত্র আন্দোলনের জন¯্রােতে, রক্তঝরা প্লাবনে, স্বীকৃতি পায় বাঙ্গালী জাতির বাংলা ভাষা।
স্বদেশ ভাষা, বাংলাভাষা, মাতৃভাষা সহজ সরল, সহজ, সহজলভ্য মোদের ভাষা। ভাষা আন্দোলনের রেখা পাতে, জব্বার, ছালাম, বরকত অকাতরে প্রাণ হারায়। শত শহীদের স্মৃতির কান্নায় বাঙ্গালীর প্রাণের ভাষা মর্যাদা পায়। বাংলা ভাষার, বাংলাদেশ জাতি মোরা বাঙ্গালী, আন্তর্জাতিক ভাষা ইংরেজী, জাতি তারা ইংরেজ, সুখ্যাতি হল তাদের মর্যাদা পেল বিদেশের। তাতে আমাদের লাফালাফির আছে কি? বিভিন্ন ভাষা আহরনে, অতিরিক্ত জ্ঞান সঞ্চারে, আমার নাই কোন মতবেদ, কোন প্রকার বিভেদ। স্বদেশে সকল ক্ষেত্রে লেখায়, মননে, উদযাপনে, কেন হবে না জাতির ভাষার সতেজতা, বর্ণভেদ ও শব্দ বিভেদ। স্বদেশ স্বজাতির কৃষ্ঠি রক্ষায় প্রয়োগ হবে কেন ইংরেজী। আজও দেখি শিক্ষাঙ্গণের নামকরনেই বাংলা ভাষার বিপর্যয়। যেমন বিদ্যালয় নয় স্কুল , মহাবিদ্যালয় নয় কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় নয় ইউনিভার্সিটি, শ্রেণী নয় কাস, ক্রমিক সংখ্যা নয় রোলনম্বর ইত্যাদি। প্রয়োগ হচ্ছে এমনিভাবে আমার স্বদেশে , অবচেতন বাঙ্গালী, স্মৃতির পাতায় নাড়া দেয় কি? ইংরেজ জাতির সাথে বিবাদে অখন্ড ভারতবর্ষে স্বধীনতা অর্জনে মর্যাদা পায় বীরবাঙ্গালী, সাড়া বিশ্ব জাগরণ ঘটে, বাংলা ভাষার স্বকীয়তায় শ্রেষ্ঠ জাতি বাঙ্গবাসী। পরবর্তীতে উভয় বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার বীজ রুপনে ধর্মীয়বিভেদ এনে, রাজনীতিতে ধর্ম টেনে, বঙ্গালীকে খেলায় মেতে দাবার চাল খেলছে বিদেশী।
ওরে স্বাধীন দেশের পরাধীন বাঙ্গালী। আন্তর্জাতিক ভাষা বলে, গোৗরবাদ্বিত ইংরেজ জাতি। বাষট্টি বৎসর পর বিবেক চেতানয় প্রশ্ন জাগে আজকের এই ৮ই ফালগুণে আজও কেন আকড়ে ধরে ইংরেজি একুশ পালন করি। নিজ জাতির ভাষাকে ¤্রয়িমান করে, অতিরিক্ত ইংরেজী ভাষেকে ধরে রেখে, ভবিষ্যতের জন্য স্বকীয়তায় ধ্বংসের বীজ রোপন করে রেখে বাঙালি জাতির লাভ হবে কি? বিভিন্ন ভাষায় জ্ঞান আহরণে, ইংরেজী ভাষার প্রয়োজন বোধে সীমাহীন জ্ঞান চর্চায় নাইকো আমার মাতামাতি। চৈতন্য, রাসুলের মননেতে শ্রষ্ঠার প্রেম মাধুর্য রসে মিশে আছে, মোদের ভাষা, সুমধুর বাংলা ভাষা। শ্রীমদ্ভগবতগীতা/আল-কোরআনের ভাষাতে, সংস্কৃত, উর্দু ভাষা পরিহারে স্থান পেয়েছে স্বতেজ ভাষা, বাংলা মোদের নিজের ভাষা, লেখক কবি, গীতিকারের প্রাণের ভাষা।
আমার হৃদয়ের ব্যাপ্ত ভাষা, আট’ই ফাল্গুনের আটান্নতে রক্ত ঝড়া আমার মায়ের ভাষা, তোমার-আমার, সকলের প্রাণের ভাষা, অথই ভায়ের আলোচনার প্রেক্ষাপটে, লিখছি আমি আপন মনে ছন্দাকারে উর্দু ভাষা সিংহ হলে, ইংরেজি ভাষা ব্যাঘ্র হবে, ময়ুর মোদের নিজ ভাষা, সুন্দর এই বাংলা ভাষা। ময়ুর পাখি খাঁচা হতে ছেড়ে দিলে সিংহ ব্যাঘ্র দু’এরই হিং¯্রতার শিকার হবে। সে দিকে চেতন হয়ে স্বদেশ প্রেমে ভাষা তথ্যেও ময়ুর পাখি আঁকড়ে রাখবে আগামী প্রজন্মের সূর্যতরুণদের হৃদ পিঞ্জরে। উভয় বাংলায় বাংগালী চেতনার ঐক্যের সেতু বন্ধনে। আজকে এ মহান দিনটি পালনে রক্তঝরা আটই ফাল্গুনের স্মৃতির কলতানে লিখতে গিয়ে প্রত্যাশী আগামী প্রজন্মের মনে গেঁথে রাখবে একুশ নয় ৮ই ফাল্গুন। মন্ত্র হোক তাদের বলবনা আর লিখবনা, উদযাপনে ধরে রাখবনা ইংরেজী, বিদেশী ভাষা ইংরেজী।
১৩৫৮ বাংলা সনে এই দিনটি ছিল ৮ই ফাল্গুন তাই তাদের স্মৃতির পাতায় জাগ্রত হোক ৮ই ফালগুন ৫৮। তৎ চেতনায় ২১ শে ফেব্রুয়ারীর তারিখ হতে পারে গড়মিল। তাতে ভাববার প্রয়োজন কি? একবিংশ শতাব্দির আগমণ ক্ষণে, সকল নবীন তরুনদের চেতনে, মননে, কলমে, স্মৃতিতে, বার বার ফিরে আসুক (’৫২ একুশের পরবর্তীতে ’৫৮ আটই ফালগুন) ৮ই ফালগুন, ৮ই ফালগুন, জাতিয় ভাষার, স্বকীয়তায় সহজ সরল মায়ের ভাষার এবং স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা ৬৬টি বছর পর এই দিনে শপথ হোক সকল বাঙ্গালী তরুণের স্বদেশ বাংলাদেশ, সোনার বাংলায় আর ইংরেজী পোষণ করব না। জাতিয় কৃষ্টি সাধারণ লক্ষপাতে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি নিয়ে দেশপ্রেম জাগ্রত করার উদ্দিপনাকে স্বাগত ও সাধুবাদ জানাই এবং সকল যুব তরুণদের প্রতি রইল আমার আহ্বান।
আগামী সূর্য সৈনিকদের ভবিষ্যত চলার পথ সুন্দর হউক তাদের মন, প্রাণ ন্যায়, সত্য আদর্শে উজ্জিবিত হোক, সাহিত্য সংস্কৃতির রেখাপাত ঘটুক বিস্তৃতধারায়। বেকারত্বের অবসান ঘটুক তাদের সৃজনশীল কর্ম তৎপরতায়। বাংলা ভাষার স্বকীয়তা রক্ষা করাই মরণপণ চেতনা হোক ৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮ বাংলা। আজকের এ দিনে স্বরণে আসছে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধামন্ত্রী শেখহাসিনার সফল প্রচেষ্ঠায় ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি লাভ করে মায়ের ভাষা বাংলা সার বিশ্বে আরেক পর্যায়ে মর্যাদা পেয়েছে। জয় বাংলা, জয় হোক বাঙ্গালী জনতার আজকের দিনে এ প্রত্যাশা আমার।
লেখক, সাংবাদিক, সদস্য খেলাঘর জাতীয় পরিষদ, আহ্বায়ক বাংলার মুখ নেত্রকোণা জেলা শাখা।