1. azadkalam884@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  2. bartamankantho@gmail.com : বর্তমানকণ্ঠ ডটকম : বর্তমানকণ্ঠ ডটকম
  3. cmisagor@gmail.com : বর্তমানকণ্ঠ ডটকম : বর্তমানকণ্ঠ ডটকম
  4. khandakarshahin@gmail.com : Khandaker Shahin : Khandaker Shahin
বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
১১ বছরে বর্তমানকণ্ঠ-
১১ বছর পদার্পণ উপলক্ষে বর্তমানকণ্ঠ পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা....

টুকরো-টাকরা ভাবনা যত – শৈশব, কৈশোর, যৌবন, জীবন ও মত্যু বিষয়ে

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম
  • প্রকাশিত : বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০

মুহম্মদ আজিজুল হক, বর্তমানকন্ঠ ডটকম : আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা, আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল, ময়ূরকন্ঠী রাতের নীলে, যো ওয়াদা কিয়া ওহ নিভানা পড়েগা, কো কো করিনা, রক্স জাঞ্জির পেহান কার ভি কিয়া যাতা হে, ইত্যাদি আমার উচ্ছল ও স্বপ্নীল কৈশোরে শ্রুত অনেকগুলি প্রিয় গানের কয়েকটি। আমার ক্যাডেট কলেজ জীবনের (ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ, ১৯৬৭-১৯৭৪ ইং)গান এগুলি। বলা বাহুল্য, ঐ সময়ের মোটামুটি অর্ধেকটা পড়েছে পূর্ব পাকিস্তান আমলে এবং অর্ধেকটা মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশ আমলে। পাকিস্তান আমলে ক্যাডেট কলেজের শ্রেণীসমূহের (৭ম শ্রেণী হতে ১২শ শ্রেণী পর্যন্ত) প্রত্যেক শ্রেণীর ছাত্রদের কমবেশি ১০% ছিল উর্দুভাষী মুসলিম পরিবার থেকে। তাদের প্রায় সকলেরই পিতামাতা ও পূর্বপুরুষ ছিলেন ভারতের বিহার রাজ্যের অধিবাসী। ১৯৪৭-এর ভারত বিভাজনের পর তারা ভারত থেকে মুসলিমপ্রধান পূর্ব পাকিস্তানে অভিবাসী হিসেবে চলে আসেন। তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক যাটের দশকের শেষাংশে পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্তানে মোট ২০ লক্ষ উর্দুভাষী বিহারী অভিবাসী হিসেবে আসেন। এদের অধিকাংশের বসবাস ছিল ঢাকা থেকে দু’শ কিলোমিটার দূরে উত্তরের ছোট শহর সৈয়দপুরে। এরপর ঢাকা, খুলনা, যশোর, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে তারা বসতিস্থাপন করেন। পূর্ব পাকিস্তানে সরকারী চাকুরে পিতার পোষ্টিংযের কারণে পশ্চিম পাকিস্তান থেকেও মাঝে মধ্যে দু’একজন ছাত্র এসে ক্যাডেট কলেজে এ ক্লাসে ও ক্লাসে যোগদান করতো। কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীদের মাঝেও দু’চারজন উর্দুভাষী থাকতেন। চার কলেজের অধ্যক্ষদের কেউ কেউ থাকতেন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে। সকলেই থাকতেন লেফ্টেন্যান্ট কর্নেল বা উইং কমান্ডার পর্যায়ের সামরিক অফিসার। যৌথ পাকিস্তান আমলে পূর্ব পাকিস্তানে মাত্র চারটি ক্যাডেট কলেজ ছিল। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ ছিল পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত প্রথম ক্যাডেট কলেজ। ১৯৫৮ সালে স্থাপিত। এরপর, ক্রমান্বয়ে আরো তিনটি ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়ঃ ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ (১৯৬৩), মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ (মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের পূর্বের নাম, ১৯৬৩) এবং রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ (১৯৬৬)।

কলেজে আমরা প্রতি সপ্তাহান্তে একটি করে ফিচার ফিল্ম দেখতাম। আমাদের কলেজের নিজস্ব সিনেমা হল ছিল; যেটি বস্তুত ছিল অডিটোরিয়াম-কাম-সিনেমা হল। সাপ্তাহিক ছুটির দিন সন্ধ্যায় আমরা ছাত্ররা ডাইনিং হলে ডিনার শেষে সিনেমা দেখতে যেতাম। আমাদের সকল শিক্ষকগণ এবং তাঁদের মিসেসরাও আসতেন সিনেমা দেখতে। বাংলা ও ইংরেজী মুভি তো থাকতোই; উর্দু মুভিও প্রায়ই দেখানো হতো, সম্ভবত আমাদের উর্দুভাষী সহপাঠী ও শিক্ষকদের কথা মাথায় রেখে। কোনো হিন্দি সিনেমা কখনোই প্রদর্শিত হতো না। ষাট ও সত্তুরের দশকে বাংলা সিনেমায় শ্রেষ্ঠ এবং দর্শকপ্রিয় অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের মধ্যে ছিলেন রাজ্জাক-কবরী, শাবানা-নাদিম, রহমান-শবনম ও আজিম-সুজাতা জুটি; আর সুচন্দা, ববিতা, সুচরিতা, রোজী সামাদ, এবং “সিরাজ-উদ-দৌলা”, “জীবন থেকে নেয়া” ইত্যাদি চলচ্চিত্রসমূহে অভিনয়-খ্যাত আনোয়ার হোসেন। পশ্চিম পাকিস্তানের জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকা মোহাম্মদ আলী-শামীম আরা জুটির উর্দু ফিল্মগুলি বেশ প্রিয় ছিল আমাদের। আমি অনেকটা শিশুসুলভ আনন্দ নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে একটি খাতায় নিয়মিত লিপিবদ্ধ করতাম কবে, কোন্ তারিখে কোন্ ফিল্ম দেখা হলো, সেগুলির প্রধান প্রধান অভিনেতা-অভিনেত্রী কারা ছিলেন, ইত্যাদি। খাতাটি আজও আমার বইপত্রের মাঝে খুঁজলে পাওয়া যাবে।

শৈশব ছিল বিচারবুদ্ধিরহিত নিষ্পাপ সরলতার কাল। তখন অযৌক্তিকভাবেই কোনো কোনো জিনিস ভালো লাগতো আবার কোনো কোনো জিনিসের প্রতি ছিল অযৌক্তিক বিরাগ ও বিতৃষ্ণা। যেমন, শৈশবে রবীন্দ্রসংগীতকে মনে হতো একেবারে অখাদ্য, অশ্রোতব্য; কি একটা ঘ্যান ঘ্যান সুর। কিন্তু পল্লীগীতি খুব মনে ধরতো; হৃদয়ে একটা আনন্দ ও বেদনার যুগপৎ অনুভূতি জাগাতো।
কৈশোরে মস্তিষ্কের বিচারবুদ্ধির সেলগুলি বিকশিত ও পরিপৃক্ত হতে শুরু করে; মনে নানা স্বপ্ন জাগে, রংধনুর সবক’টি রঙ দৃষ্টিকে রঙ্গীন করে তোলে, প্রেমানুভূতির সৃষ্টি হয় মনে, প্রচ্ছন্ন আকুলতা, ব্যাকুলতা, ভালোবাসা মনের গভীরে স্থান করে নেয়। কৈশো্র তাই মানব জীবনের অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি অধ্যায়। আমার নষ্টালজিয়া তাই আমার শৈশব নিয়ে যতটা নয় তার চেয়ে ঢের বেশি আমার কৈশোর নিয়ে। এই ষাটোর্ধ্ব বয়সে তাই শৈশবে নয়, ফিরে যেতে ইচ্ছে হয় কৈশোরের চঞ্চলচিত্তের অম্ল-মধুর স্বপ্নাবিষ্ট দিনগুলিতে। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে পশ্চাতে নেয়া গেলেও জীবনের কাঁটা পেছনের দিকে ঘোরানো যায় না। জীবন শুধুই অপ্রতিরোধ্য গতিতে সম্মুখে এগোয়। জীবন যেন একটি চলমান রেলগাড়ী। রেললাইনের শেষ প্রান্ত আগ্নেয়গিরির বিশাল জ্বালামুখের মতো এক গহীন গহবরের মুখে গিয়ে শেষ হয়েছে যেন। সেই গহবরে রেলগাড়ীটির অবধারিত পতন কেউ আটকাতে পারে না। ভাবতে ভীষণ ভয় ও কষ্ট হয় না কি?

আর কখনো ফিরে যাওয়া যাবে না বলেই নস্টালজিয়া নিয়ে আমরা অতীতের দিকে তাকাই সতৃষ্ণ নয়নে; এক গভীর বেদনার অঞ্জন মেখে চোখে। লেখাটি শুরু করেছিলাম যে গানগুলির উল্লেখ করে সেগুলি যখন প্রথম গীত হয় তখন আমি ভরা কৈশোরে। তাই আজও যখন আমার ঐ প্রিয় গানগুলি শুনি, গীতিময় সেই দিনগুলিতে মুহূর্তে ওরা নিয়ে যায় আমায়। তবে তা কেবলই কল্পনায়, বাস্তবে তো নয়। আর বাস্তবিকভাবে শৈশবে বা কৈশোরে প্রত্যাবর্তন সম্ভব হলেও আমরা তা সত্যিই করতাম কিনা সেটি ভীষণ ধরনের সংশয়াচ্ছন্ন একটি বিষয়। মানুষের মন দুর্বোধ্য রকমের জটিল। তাতে যে কত ধরনের, কত অসংখ্য, অগণিত ও নিগূঢ় এবং বিপরীতমুখী অনুভূতি কত অজানা স্তরে বিদ্যমান থাকে তার হদিস পাওয়া যায় না। কোন্ পরিস্থিতিতে মনে যে কী ক্রিয়া বা প্রতিক্রিয়া হবে সে বিষয়ে আগে থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় না। শৈশব, কৈশোর পার হয়ে আমরা যৌবনে পদার্পণ করি। কত নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে আমরা কত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। কত আপনজনের আগমন হয় জীবনে। তাদের সবাইকে ফেলে আমরা কি সত্যিই ফিরতে পারতাম আমাদের আপাত কাংখিত শৈশব বা কৈশোরে? অসম্ভব হতো সে প্রত্যাবৃত্তি। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, অতীত আর বর্তমানের সেই দ্বন্দ্বে আমরা অতীতবিধুরতাকে উপেক্ষা করে বর্তমানেই থেকে যেতাম। অতীতের দিকে কেবল সতৃষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতাম। এর বেশি কিছু নয়। আর বাস্তবিকভাবে আমরা তাই-ই করি, সত্যি সত্যিই যেহেতু অতীতে প্রত্যাবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। বাস্তবকে অস্বীকার করার কোনো ক্ষমতা মানুষের নেই। জীবন এগিয়ে চলে অপ্রতিহত গতিতে এক ভয়াবহ শেষ পরিণতির দিকে। প্রাণীকুলের সকলেই অবশ্যম্ভাবী সেই পরিণতির দিকে এগোয়। “কুল্লু নাফসিন জায়িকাতুল মাউত”, “প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে” (আল কুর’আন)। যে কোনো প্রাণীর জন্মের মুহূর্ত থেকেই তার জীবন সম্মুখে এগোয় মৃত্যুর অপচ্ছায়ায়। মাতা ধরিত্রী জীবনকে মৃত্যুর হাত হতে রক্ষা করতে আপ্রাণ যুদ্ধ করছে মৃত্যুর সঙ্গে। সে দ্বন্দ্ব চলছে অবিরাম। অবধারিতভাবেই মৃত্যু বিজয়ী হয় অবশেষে। তবে পরাভব মানে না বসুমতী। জীবনকে রক্ষার নিমিত্তে ধরণীমাতা ও মৃত্যুর এই ক্লান্তিহীন মল্লযুদ্ধের অনুপম ও অবিস্মরণীয় চিত্রায়ন করেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। “তৃণ ক্ষুদ্র অতি/তারেও বাঁধিয়া বক্ষে মাতা বসুমতী/কহিছেন প্রাণপণে, ‘যেতে নাহি দিব।’/আয়ুক্ষীণ দীপমুখে শিখা নিব নিব- /আঁধারের গ্রাস হতে কে টানিছে তারে,/কহিতেছে শতবার ‘যেতে দিব নারে’। ধরিত্রী “চিরকাল ধরে যাহা পায় তাই সে হারায়; তবু তো রে/ শিথিল হল না মুষ্টি, তবু অবিরত………অক্ষুণ্ন প্রেমের গর্বে কহিছে সে ডাকি/ ‘যেতে নাহি দিব’।…….দণ্ডে দন্ডে পলে পলে টুটিছে গরব,” তবু ধরিত্রী “কিছুতে না মানে পরাভব”।

ঈশ্বরের মতো যদি এই পৃথিবীর মাটি ছেড়ে নিজেকে ঊর্ধ্বাকাশে নিয়ে স্থাপিত করে এই পৃ্থিবীর জীবনের দিকে তাকানো যেত, তাহলে কী নিষ্ঠুর, অথচ কী ভয়ঙ্কর সুন্দর, একটি চিত্রই না চোখে পড়তো। (“খেলিছো এ বিশ্ব লয়ে বিরাট শিশু তুমি আনমনে।”) সব প্রজাতির প্রাণীরই অসংখ্য, অগণিত প্রজন্ম জন্মগ্রহণ করছে; জীবনে তাদের কত হৈ চৈ, কত কলরব, কত সুখ, কত বিসুখ –সবই তারা করছে মৃত্যুর ছায়ায় অবস্থান করে। অবশেষে, মৃত্যুর ক্রোড়ে ঢলে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে। তাদের জায়গায় আসছে তাদের নতুন প্রজন্ম বিরামহীনভাবে; যেন মহাসমুদ্রের অসংখ্য, গণনাতীত ঢেউ আসছে অবিরাম ধেয়ে সৈকতের দিকে; এসে বেলাভূমিতে ভেঙ্গে পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে মহাকালের গর্ভে। আর তাদের পশ্চাতে আসছে আরো আরো ঢেউসমূহ, মরুভূমির বালুকণার মতো গণনার অতীত।

আমি ইদানীং প্রায়ই মৃত্যুর কথা ভাবি। তবে মৃত্যুর ভয়ে ভীত না হয়ে আমি সেই ভয়কে জয় করবার প্রয়াস পাই। আমি নিষ্পাপ বিহঙ্গকুলের মৃত্যুর কথা ভাবি। আমি পবিত্র পুষ্পের মৃত্যুর কথা ভাবি। আমি কত হৃদয়বিদারক শিশু-মৃত্যুর কথা ভাবি। আমি কত কত জোছনার মৃত্যু দেখেছি কত শত রাতে, দেখেছি কত শান্ত, মৃদুমন্দ, সুখাবহ দখিনা সমীরণের অকাল মৃত্যু। ভাবি এরা যদি পারে নীরবে, নিঃশব্দে, নির্ভয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে, তাহলে আমি কেন পারবো না।
তাছাড়া, অতিদীর্ঘ ও প্রলম্বিত জীবন কাম্য নয় আমার। কারণ, সে ক্ষেত্রে সমবয়সী এবং সহধর্মিনীসহ কাছাকাছি বয়সের সকল প্রিয়জনই হয়তো চলে যাবে, বন্ধুরাও হয়তো তেমন কেউ আর থাকবে না সঙ্গ দিতে। নিজের সন্তানেরা তাদের নিজ নিজ পুত্র-কন্যা ও পৌ্ত্র-পৌ্ত্রী নিয়ে ব্যস্ত হবে। (ভালো্বাসা জলের মতোই নীচের দিকে ধায়।) আমি হয়ে যাবো, একখন্ড ছিন্ন, মলিন ও অপ্রয়োজনীয় বস্ত্রের মতো অনাকাংখিত, অপাংক্তেয়। বিবেচিত হবো একটি ভুষন্ডির কাক, অর্থাৎ “অন্যায়ভাবে দীর্ঘজীবী” হিসেবে। “চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।”

গ্রীক মি্থলজিতে ঊষাকালের দেবী ইওস (রোমান মিথলজির অরোরা) ট্রয়ের সুদর্শন রাজপুত্র টিথোনাসকে অপহরণ করে এবং তাকে অমরত্ব দানের জন্য দেব-দেবীদের রাজা জিউসকে অনুরোধ করে। ইওসের অনুরোধ অনুযায়ী জিউস টিথোনাসকে অনন্ত জীবন দান করে। কিন্তু ভুলক্রমে অথবা অবহেলাজনিত কারণে টিথোনাসের জন্য অনন্ত জীবনের পাশপাশি অন্তহীন তারুণ্য বা যৌবন চায় নি ইওস। এর পরিণতিতে, টিথোনাস কালক্রমে চরম বার্ধক্যে উপনীত হয়; তার শরীর ক্রমশ ক্ষয়ে গিয়ে ত্বক কুঞ্চিত হয়ে যায়। জীবন তার জন্য জগদ্দল পাথরের মতো এক দুঃসহ ভারী বোঝা হয়ে ওঠে। মৃত্যুর মাধ্যমে দুর্বিষহ অমরত্ব থেকে সে মুক্তি চায়। কিন্তু তার মৃত্যু হবার নয়। পূর্বাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে সে দৃষ্টিপাত করে। পৃথিবীর মানুষ মরণশীল। তাই সে তাদেরকে ভাগ্যবান মনে করে। অন্তহীন তারুণ্যবিরহিত অনন্ত জীবন তাই কোনো আশীর্বাদ নয়; অভিশাপ। একই কারণে, অতিদীর্ঘ ও প্রলম্বিত জরাগ্রস্ত জীবনও হতে পারে দুঃস্বপ্নের মতো দুঃসহ এক অভিশাপ।

লেখক – সাবেক রাষ্ট্রদূত, চীন।




এই পাতার আরো খবর

















Bartaman Kantho © All rights reserved 2020 | Developed By
Theme Customized BY WooHostBD