নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,রোববার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৮: পরীক্ষার দিন সকালে শিক্ষকরাই খাম খুলে প্রশ্নফাঁস করে দেন বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। রোববার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রশ্নফাঁসসহ একাধিক কারণে সরকারকে চাপে থাকতে হয় মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রশ্নফাঁস আমাদের দেশের দীর্ঘকালের সমস্যা। আমরা শুরু থেকে এই সমস্যা মোকাবিলা করছি। আগে বিজি প্রেস একটি সমস্যা ছিল। কিন্তু আমরা সেটাকে নিরাপদ করেছি। এখন সেখান থেকে প্রশ্নফাঁসের কোনও আশঙ্কা নেই। সেখান থেকে জেলা-উপজেলায় প্রশ্ন পাঠানো হয়, সেটাকেও নিরাপদ করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যাদের নিরাপদ ভাবা উচিত, সেই শিক্ষকরাই পরীক্ষার দিন সকালবেলায় প্রশ্নফাঁস করেন। কিছুসংখ্যক শিক্ষক যারা শিক্ষক সমাজের সম্মান নষ্ট করছে এবং সার্বিকভাবে সরকারকে সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে। তারা পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্রের খাম খুলে এটা প্রচার করে দেয়। এতে তারা অর্থও আয় করে, সরকারকেও বেকায়দায় ফেলতে চায়।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, তবে এবার আমরা আরও কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। কোনোভাবে কাউকে জড়িত পাওয়া গেলে, তার কঠোর শাস্তি হবে। শিক্ষকের চাকরি থাকবে না। পরীক্ষাকেন্দ্র থাকবে না। স্কুলও আমরা কেটে দিতে পারি। কোনও ধরণের মোবাইল ফোন কেউ পরীক্ষার হলের পাশে নিতে পারবেন না। শেষ সময় প্রশ্নফাঁস হয় বলে আমরা এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে গিয়ে পরীক্ষার্থী সিটে বসতে হবে। তারপর প্রশ্নের খাম খোলা হবে। এটা পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা মোবাইল টিমও গঠন করেছি। আশা করি সবার সহযোগিতায় বন্ধ করতে পারবো।
নুরুল ইসলাম নাহিদ আরও বলেন, প্রশ্নফাঁসকারীরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে। আমরা যখন এর পাল্টা ব্যবস্থা করি, তখন তারা আরেকটি প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়। এটা হচ্ছে উন্নয়নের সমস্য। প্রযুক্তির সমস্যা। তবে, এটা আমরা মোকাবিলার চেষ্টা করছি। আশা করি সবার সহযোগিতায় এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
এমপিওভুক্তি বিষয়ে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্তির বিষয়টি অর্থপ্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে। অর্থমন্ত্রী এবার টাকা দিতে রাজি হয়েছেন। আমরা নীতিমালার আলোকে যথাসম্ভব শিগগিরই এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা নেব।
চট্টগ্রাম-৪ আসনের দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের সংখ্য (অক্টোবর ২০১৭ পর্যন্ত) ২০ হাজার ৮৪৭টি।
মন্ত্রী জানান, ৩৪তম বিসিএস হতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৮৯৮জনকে সুপারিশ করা হয়। এরমধ্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ প্রত্যায়নের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৪৯৫ জনকে শূন্য পদে পদায়ন করা হয়েছে। এছাড়া ৩৬তম বিসিএস হতে প্রধান শিক্ষকের সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্য পদ পূরণের জন্য পিএসসিকে জানানো হয়েছে।
সরকার দলের এমপি ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারি ২০১৭ অনুযায়ী বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরেপড়ার হার ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সানজিদা খানমের প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান, সারাদেশে পরিত্যক্ত বাড়ির সংখ্যা ৯ হাজার ৭৮০টি। মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী ঢাকা জেলাতে পরিত্যক্ত বাড়ির সংখ্য ৬ হাজার ৪০৯টি। বরিশাল বিভাগের কোনও জেলায় পরিত্যক্ত বাড়ি নেই বলেও তিনি জানান।
এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, সমাজসেবা অধিদফতরের জরিপ মতে দেশে শারীরিক প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৬ লাখ ৮৫ হাজার ২৬৩ জন এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর সংখ্যা এক লাখ ২১ হাজার ৪৭ জন।
সূত্র: বাংলাট্রিবিউন