নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭: সংবিধান পরিবর্তনে সরকারের যে অনৈতিকতা এবং জনগণের সাথে প্রতারণা তার বিচার আগামী নির্বাচনে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব হলরুমে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মওদুদ আহমদ বলেন,‘ সংবিধান নির্বাচনে বাধা হতে পারে না। বিএনপি চেয়ারপারসন যদি সংবিধান পরিবর্তন করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় ফিরে আসতে পারে তাহলে আজ যারা সরকারে আছে সেই আওয়ামী লীগ কেন সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় ফিরে আসতে পারবে না। আপনারাও ফিরে আসুন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও অপেক্ষা করছি সমঝোতার মাধ্যমে রাজনৈতিক সভ্যতা ও গণতন্ত্র ফিরে আসুক। যাতে করে দেশের মানুষ তার গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পায়।’
আওয়ামী লীগ যা খুশি তাই করে মন্তব্য করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) কোনো দিন গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা মুখে বলে এক কথা আর কাজ করে ভিন্ন। তারাই অতীতে রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছে। তাদের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় দেশে দুর্ভিক্ষও হয়েছে। যার ধারাবাহিকতায় আজও আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনায় এসে দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ যদি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে আসে তাহলে দেশের মানুষের কাছে তারা স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন প্রবীণ এ আইনজীবী।
দেশের রাজনীতিবিদদের এখন কোন আদর্শ নাই দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘রাজনীতিতে বিশ্বাস নেই। সরকার বিশ্বাস করে না বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে আর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস করে না সরকারকে। তাই একে অপরের প্রতি সেই বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে। রাজনৈতিক মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় যে যত কথাই বলুক না কেন শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন শুধুমাত্র নামে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তাও চলবে না।’
আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে ইঙ্গিত করে মওদুদ বলেন, ‘সিটি নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন এক নয়। আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে থাকি। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হই। তারপরও দেখা যায় সরকার ও তার রাজনৈতিক দলগুলো নানাভাবে আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে বরখাস্ত করে রাখে দায়িত্ব পালন করতে দেয় না।’
মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর স্মৃতি চারণ করে তিনি বলেন, ‘মজলুম ভাসানী ক্ষমতার জন্য রাজনীত করেননি, তিনি রাজনীতি করেছেন নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায়। তিনি আন্দোলন করেছেন যে সরকার সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছেন তার বিরুদ্ধে।’
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাঈদ আহমেদ, কৃষকদল নেতা শাহজাহান মিয়া প্রমুখ।