রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন

এক পরিবারের ৭ জনের মৃত্যু- শোকানুষ্ঠানে যাওয়ার পথে শোকে ভাসালেন তারা

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ১২৩ পাঠক
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:০৬ অপরাহ্ন

১৫ দিন আগে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় মারা যান ফটিকছড়ির শাহনগর এলাকার ৭০ বছর বয়সী কনক রানী দাশ। মঙ্গলবার প্রয়াতের স্বজনরা তার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেই শোকানুষ্ঠানে যোগ দিতে চন্দনাইশের জোয়ারা এলাকা থেকে চার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন প্রয়াতের নাতনি রিতা রানী দাশ। সঙ্গে ছিল তার এক ননদ, ননদের ছেলে ও ভাসুরের ছেলে। চন্দনাইশ থেকে চট্টগ্রাম শহরে এসে নতুন পাড়া থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করেন বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে।

তাদের বহনকারী অটোরিকশাটি দুপুর ১২ টার দিকে হাটহাজারীর চারিয়া পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস ও প্রাইভেট কারের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সটকে পড়ে প্রাইভেট কার। ননদের ছেলে ও অটোরিকশার চালক ছাড়া ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রিতাসহ অন্যরা। প্রাণে বাঁচলেও গুরুতর আহত হন অটোরিকশার চালক ও রিতার ননদের ছেলে। শোকানুষ্ঠানে যাওয়ার পথে একসঙ্গে প্রাণ হারান সাত জন। শোকের সাগারে ভাসান স্বজনদের।

রীতা রানী দাশের শ্বশুর বাড়ি ও বাবার বাড়ি এলাকার জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

নিহতরা হলেন চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর এলাকার হিন্দুপাড়ার নারায়ণ দাশের স্ত্রী রিতা রানী দাশ, বড় মেয়ে ১৭ বছর বয়সী শ্রাবন্তি দাশ, ছোট মেয়ে ৯ বছর বয়সী বর্ষা দাশ, ৪ বছর বয়সী জমজ ছেলে দ্বীপ দাশ ও দিগন্ত দাশ, ভাসুরের ছেলে বিপ্লব দাশ এবং ননদ চিনু বালা দাশ। আহত হন অটোরিকশা চালক বিপ্লব মজুমদার ও চিনু বালা দাশের ছেলে বাপ্পা দাশ।

জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মূলত রীতা রানী দাশ দাদির শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। পথেই এই নির্মম দুর্ঘটনা। আকষ্মিক এই ঘটনায় পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে।’

রীতা রানী দাশের বাবার বাড়ি ফটিকছড়ির শাহনগর এলাকার ইউপি সদস্য সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘রীতার বাবার বাড়ও এখানে। ১৫ দিন আগে তার দাদি মারা গেছেন। আজ ওনার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান। এখানে আসার কথা ছিল তাদের। কিন্তু পথেই ঘটলো এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি।’

দুর্ঘটনার বিষয়ে নাজিরহাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল বলেন, ‘এটা সিঙ্গেল লেন সড়ক। ধারণা করা হচ্ছে কোনো একটা গাড়ি ওভারটেকিংয়ের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিহত সবার মরদেহ হাটহাজারী থানায় রাখা হয়েছে।’

নিহতদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে একসঙ্গে একই পরিবারের ৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়নের পুরো মুহাম্মদপুর এলাকা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *