শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন আজ: খুলছে আরেকটি স্বপ্নের দুয়ার

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৮৫ পাঠক
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন

বহুলপ্রতীক্ষিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশ যান চলাচলের জন্য আজ শনিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দেশে যোগাযোগের আরেকটি স্বপ্নের দুয়ার খুলবে। এই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে রাজধানী ঢাকায় যানজট অনেকটাই কমে আসবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আক্তার এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেল ৪টায় শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে এক অনুষ্ঠানে এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর সেখানে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

উদ্বোধনের পরদিন বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এই অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। বোর্ডিংয়ের জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে বনানী ও মহাখালীতে দুটি র‌্যাম্প আপাতত বন্ধ থাকবে। এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। থ্রি-হুইলার, সাইকেল ও পথচারীদের এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে দেয়া হবে না। মোটরবাইকও এখনই চলতে পারবে না।

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের টোল রেট ৮০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করে।

ক্যাটাগরি-১-এর অধীনে যেকোনো স্থান থেকে বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশ অতিক্রম করার জন্য গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের নিচে) এবং হালকা ট্রাক (৩ টনের নিচে) টোল ৮০ টাকা।

মাঝারি ট্রাকের জন্য (ছয় চাকা পর্যন্ত) যেকোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য টোল ক্যাটাগরি-২-এর অধীনে ৩২০ টাকা। ক্যাটাগরি-৩-এর অধীনে যেকোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য ট্রাকের (৬ চাকার বেশি) টোল ৪০০ টাকা। যেকোনো পয়েন্ট থেকে রুট পার হওয়ার জন্য যেকোনো বাসের (১৬ সিট বা তার বেশি) টোল রেট ৪-ক্যাটাগরির অধীনে ১৬০ টাকা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

প্রাথমিকভাবে এক্সপ্রেসওয়েতে গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার; এইচএসআইএ থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে যানবাহনের সময় লাগবে ১০ মিনিট।

১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ১১ কিলোমিটার র‌্যাম্পসহ, অংশটির দৈর্ঘ্য হবে ২২ দশমিক ৫ কিলোমিটার। প্রাথমিকভাবে এই অংশের ১৫টির মধ্যে ১৩টি র‌্যাম্প খোলা হবে। বনানী ও মহাখালীর র‌্যাম্প নির্মাণ শেষ হলেই খুলে দেয়া হবে।

প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, এতে ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং (ভিজিএফ) তহবিল ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা, যা বাংলাদেশ সরকার প্রদান করবে।

ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড বিনিয়োগকারী কোম্পানি। এতে ইতালীয় থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার রয়েছে ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) শেয়ার ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

প্রকল্প অনুযায়ী, প্রথম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি এবং পর্যালোচনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রকল্প সমাপ্তির সময়কাল ছিল জুলাই ২০১১ থেকে জুন ২০২৪।

বনানী রেলওয়ে স্টেশন থেকে মগবাজার লেভেল ক্রসিং পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।

গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে বেশ কিছু অবকাঠামো প্রকল্প শুরু হয়েছে। আকার, বাজেট ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিবেচনা করে এসব প্রকল্পের অনেকগুলোকে মেগা প্রকল্প বলা হয়েছে।

সরকার তাদের কয়েকটিকে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতু, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্প এমআরটি লাইন-৬ এবং চন্দ্রা-এলেঙ্গা চার লেন মহাসড়ক সম্পন্ন হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং দীর্ঘতম আন্ডারওয়াটার রোড টানেল শিগগিরই যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্যান্য প্রকল্প পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলওয়ে সেতু। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং তাই সরকারের মূল ফোকাস এখন তাদের সময়মতো সম্পন্ন করা।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশের যোগাযোগ, পরিবহন ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোর রূপান্তরের লক্ষ্যে বেশ কিছু স্মারক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আধুনিক পরিবহনব্যবস্থা ঢাকা মেট্রোরেল আংশিক চালু করেছে এবং পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ অন্যান্য মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *