শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন

কাঠমান্ডু ট্র্যাজেডি: সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন তিনজন

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৩৮ পাঠক
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৭:০৩ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, বুধবার, ২৮ মার্চ ২০১৮: ‘নতুন জীবন পেয়েছি, এ জীবন মানুষ আর দেশের কল্যাণে বিলিয়ে দেব। মানুষকে ভালোবাসব। সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়াব।’ কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান দুর্ঘটনায় আহত শেখ রাশেদ রুবায়েত।

বুধবার বিকালে রুবায়েতসহ আহত মেহেদি ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার স্বর্ণা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল বার্ন ইউনিট থেকে স্ব-স্ব বাসায় ফিরেছেন। এর আগে সকালে তাদের ৩ জনকে ঢামেক হাসপাতাল মেডিকেল বোর্ড ছাড়পত্র দেয়।

বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাশেদ রুবায়েত বার্ন ইউনিট থেকে বের হন। তার বড় বোন ফারজানা আক্তারের হাত ধরে বার্ন ইউনিটের ৫ তলা থেকে নিচে নেমে আসেন।
ফারজানা জানান, আমাদের এ ভাই হচ্ছে পরিবারের আনন্দ সুখ। সকাল থেকেই ধানমন্ডির বাসায় আত্মীয়স্বজন ভিড় জমিয়েছে। বার্ন ইউনিটে তার সঙ্গে দেখা করা ছিল সীমিত। তার স্ত্রীসহ ১০ মাসের শিশু আদরিয়ান রুবায়েতের জন্য অপেক্ষা করছে।

রুবায়েত জানান, ইচ্ছে করছে উড়াল দিয়ে বাসায় যেতে। আমার ১০ মাসের শিশুকে দেখতে, বুকে জড়িয়ে ধরতে ব্যাকুল হয়ে আছি। আমি আর কখনও বিমানে উঠব না। এ জীবন সাধারণ মানুষের তরে বিলিয়ে দেব।

বিকাল ৪টায় বার্ন ইউনিটের ৫ তলা থেকে নিচে নেমে আসেন রাশেদ মেহেদি ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহার স্বর্ণা। এ সময় তার বেশ কয়েকজন স্বজন সঙ্গে ছিলেন।

মেহেদি জানান, গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। ডাক্তার ছুটি দিয়েছেন। এখন কেমন আছেন? খুব একটা ভালো না। তবে, বাড়িতে যেতে মনটা ছটফট করছে। মা-বাবা আত্মীয়স্বজনদের দেখতে প্রচণ্ড ইচ্ছে করেছেন। হাসপাতালে মন বসছে না। পায়ে ও বুকে ব্যথা আছে। ডাক্তার বলেছেন, আগামী ২ সপ্তাহ পর হাসপাতালে আসতে।

দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মেহেদি জানান, দেশের মানুষ আমাদের জন্য দোয়া করেছেন। আরও দোয়া চাই, যাতে নতুন পাওয়া এ জীবন ভালো কাজে বিলিয়ে দিতে পারি।

স্বর্ণার চোখে মুখে আতংকের ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। স্বামীর হাত ধরে আস্তে আস্তে হাঁটছিলেন তিনি। স্বর্ণা জানান, আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া জানাচ্ছি, তিনি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাচ্ছি, অনেক ভালো লাগছে। আমার বুকে এখনও ব্যথা হয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কাশির সঙ্গে কালো ধোঁয়া বের হয়। কাশি দিতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ডাক্তার বলেছেন, চিকিৎসা চালু রাখতে। স্থানীয় ডাক্তার কিংবা বার্ন ইউনিটের ডাক্তারদের দেখাতে।

এদিকে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত তিনজনই বর্তমানে সুস্থ হওয়ায় তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢামেক বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেন, বিমান দুর্ঘটনার পর নেপাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমাদের গঠিত মেডিকেল টিম তাদের (আহতদের) সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিয়েছেন। বুধবার সর্বশেষ তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। তারা সুস্থ আছেন। তবে তাদের মধ্যে ট্রমা বিরাজ করছে এখনও। উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত মেহেদী হাসান, কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও শেখ রাশেদ রুবায়েতকে চিকিৎসা দিয়ে বাসায় ফেরত পাঠাতে পেরে তিনিসহ পুরো টিম খুশি বলে জানান ডা. সামন্ত লাল সেন।

বার্ন ইউনিটের পরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম বলেন, একই দুর্ঘটনায় আহত আলমুন নাহার এ্যানি ট্রমায় ভুগছেন এবং শেহরিনের পিঠের অস্ত্রোপচার করায় তাদের এখনি ছেড়ে দেয়া যাচ্ছে না। আরও প্রায় ২ সপ্তাহ সময় লাগবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *