শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০১ অপরাহ্ন

কোভিড১৯ ভ্যাক্সিন ‘মঙ্গলবারে শুরু মঙ্গলযাত্রা’

ডা. ইসমত কবীর, ইংল্যান্ড। / ৫৫ পাঠক
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০১ অপরাহ্ন

যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেল ফাইজার এর এমআরএনএ (BNT162b2) টীকা।

কোভিড১৯ এর টীকা অনুমোদন এর ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বে প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিল যুক্তরাজ্য।

টীকার ক্ষেত্রে ‘এমআরএনএ’ বা বংশগতির একক জিন নির্ভর প্রযুক্তি আর আগে কখনো ব্যবহৃত হয়নি। সেদিক থেকেও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় এ উল্লেখযোগ্য সংযোজন।

বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব অগ্রগতি টীকা তৈরীর সময়কাল দশ বছর থেকে দশমাসে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে, এ এক অনন্য নজির।

টীকার উদ্ভাবক তুর্কি বংশোদ্ভূত জার্মান ডাক্তার দম্পতি ‘উগুর সাহিন’ আর ‘ওজলেম তুরেসি’ ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মানির বায়োন্টেক এর যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুত এ টীকাটি চূড়ান্ত পর্বে চল্লিশ হাজার স্বেচ্ছাসেবী অংশ নেন। বিভিন্ন বয়স ও জাতি গোষ্ঠীর লোকজন এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

একুশ দিনের ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হয়, বার দিনের মাথায় এন্টিবডি তৈরি শুরু হয় এবং দ্বিতীয় ডোজ এর সাতদিন পর থেকেই পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় এন্টিবডির উপস্থিতি সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে মামুলি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপস্থিতি প্রমাণ করেছে টীকাটি নিরাপদ।

চূড়ান্ত বিশ্লেষণে প্রায় পচানব্বই ভাগ কার্যকর বলে প্রতীয়মান হয়েছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও এটা কার্যকর বলে প্রমাণ মিলেছে।

কতদিন সুরক্ষা কার্যকর থাকবে বা এটা সংক্রমণ বিস্তার প্রতিরোধে কতটুকু সক্ষম হবে সে ব্যাপারে এখনও তথ্য মেলেনি।

ফাইজার এ টীকার থেকে কোন মুনাফা করবে না বলে জানিয়েছে, এতে করে এর মূল্য তূলনামূলকভাবে কম।

টীকাটি তাপ সংবেদী, তাই মাইনাস সত্তর ডিগ্রী সেলসিয়াস এ এর পরিবহন ও সংরক্ষণ প্রয়োজন। তাই এ টীকা বিতরণের জন্য অত্যাধুনিক অবকাঠামোর শীতল-শৃঙখল প্রয়োজন।

এ টিকার প্রতি প্যাকে ৯৭৫টি ডোজ থাকে, একবার খুলে ফেললে ৯৭৫ জনকে দিতে হয়। ব্যবহৃত না হলে পাঁচ দিনের বেশি জমা রাখা বা ভাগাভাগি করে বিতরণ এর কোন সুযোগ নেই।

যুক্তরাজ্যে পঞ্চাশটি হাসপাতাল ও পরবর্তীতে বিশেষ সুবিধা সম্বলিত টীকাদান কেন্দ্রগুলিতে আগামী মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর, ২০২০) থেকে এ টীকাদান শুরু হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও কাজ করে যাচ্ছেন।

যুক্তরাজ্য চার কোটি ডোজের আগ্রিম ক্রয়াদেশ দিয়েছে, এর মধ্যে এক কোটি ডোজ এ বছরে পাওয়া যাবে। আট লক্ষ ডোজ দিয়ে আগামী মঙ্গলবার থেকে টীকাদান শুরু হচ্ছে, যার মাধ্যমে চার লাখ লোককে এ টীকা দেওয়া যাবে।

নার্সিং হোম এবং এর সেবাকর্মী টীকা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন। দ্বিতীয় সারিতে আছে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীগণ। দশটি স্তরের অগ্রাধিকার তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে।

আশা করা যাচ্ছে মডারনার এমআরএন এ ভ্যাক্সিন ও অক্সফোর্ড এর বাহক নির্ভর টীকাও অচিরেই যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার জরুরী ব্যবহার এর জন্য অনুমোদন পাবে।

লেখক – জেরিয়াট্রিক ও জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, ইংল্যান্ড।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *