রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন
করোনা শিথিলের পরই আবারও দীর্ঘ দুই বছর পর ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াতে সুদিন ফিরছে। কলকাতা ঢাকা খুলনা ও আগরতলাগামী যাত্রীদের জন্য দুই বছর পর ফের চালু হচ্ছে খুলনা-ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী ‘বন্ধন ও মৈত্রী এক্সপ্রেস’। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন থেকে দু দেশের মধ্যে গড়াবে ট্রেনের চাকা। ফলে ফের বেনাপোলসহ কলকাতাগামী অসংখ্য যাত্রীদের অনেকটাই মিলবে স্বস্তি। বর্তমানে প্রতিদিন বেনাপোল-পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করছেন দুই হাজার যাত্রীরও বেশি। তাঁদের মধ্যে ৯০ শতাংশ যান চিকিৎসা ও ব্যাবসায়িক কারণে। ট্রেনের সুবিধা না থাকার কারণে চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। বিমানে ভিসা দেওয়ায় বাড়ছে দুর্ভোগ।
২৬ মার্চ থেকে ভারত-বাংলাদেশ যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর বিষয়ে চিঠি দিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিচালক) সাদ্দাত শাহাদাত আলীর কাছে এ চিঠি দেওয়াা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম। এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে ভারতীয় রেলওয়ে চাচ্ছে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে এই রেলটি আবার চলাচল করুক।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে বড় ভূমিকা রয়েছে ‘বন্ধন এক্সপ্রেসে’র। চিকিৎসা, বাণিজ্যসহ একাধিক কাজে বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ভারত যান। অবশ্য অধিকাংশেরই গন্তব্য হয় কলকাতা শহর। তেমনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে অনেকেই বাংলাদেশ আসেন। গত ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি উদ্বোধন করা হলেও ৯ নভেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চালু হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের ১২ মার্চ শেষবারের মতো ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ কলকাতা থেকে খুলনায় আসে। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে এই ট্রেন চলাচল। তা ফের চালু হচ্ছে জানতে পেরে খুশি সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় চিকিৎসা প্রত্যাশিরা।
বেনাপোল রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে করোনার আগে প্রতিদিন ঢাকাসহ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৫-৬ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে যাতায়াত করতেন। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হলে গত ২০২০ সালের ১২ মার্চ খুলনা-কলকাতা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ সার্ভিস বন্ধ ঘোষনা করা হয়। সেই থেকে বন্ধ আছে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি। পরে পণ্যপরিবহন চালু হলেও যাত্রী পরিবহন বন্ধই থাকে। করোনার প্রভাব কমতে শুরু করলেও এখনো দু’দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে তিনটি ট্রেন চলাচল করতো।
ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস, খুলনা-কলকতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস ও ঢাকা-জলপাইগুড়ি রুটে মিতালী এক্সপ্রেস। করোনার কারণে এই তিনটি রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ট্রেনগুলো চালুর ব্যাপারে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ রেলওয়ের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে পত্র পাঠিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে দ্রুত ট্রেনগুলো আবারো চলাচল করবে। এদিকে দু’বছর বন্ধ থাকার পর ফের আগামী ২৬ মার্চ থেকে পেট্রাপোল স্টেশন হয়ে কলকাতা-খুলনা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু হচ্ছে বলে জানালেন ভারতের পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনের রেলওয়ে ম্যানেজার এস পি সিং। গত সপ্তাহে বনগাঁ থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত রেলের বৈদ্যুতিকরণের কাজ খতিয়ে দেখতে এসে তিনি এ কথা বলেন স্থানীয়সংবাদকর্মীদের।
বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বেনাপোলের স্থানীয় মানুষ ও ভারতে যাতায়াতকারী পাসপোর্টযাত্রীদের সুবিধার্থে খুলনা-বেনাপোল-কলকাতা রুটে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ সার্ভিস চালু করা হয়েছিল। করোনায় বন্ধ থাকার পর সব কিছু চালু হলেও এটি চালু না হওয়ায় ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতকারী যাত্রীসহ সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। ট্রেনটি চালু হলে খুলনা, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রীর যাতায়াত সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি বাড়বে।
করোনার প্রকোপ কমায় দেশের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে রেল পরিষেবা৷ এবার ফের ভারত এবং বাংলাদেশের (Bangladesh) মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হতে চলেছে৷ রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী ২৬ মার্চ থেকে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা শুরু হবে (Kolkata Dhaka TraiTrain ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বর্তমানে তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে৷ কলকাতা স্টেশন থেকে ঢাকার মধ্যে যাতায়াত করে মৈত্রী (Maitree Express)ও বন্ধন এক্সপ্রেস (Bandhan Express)৷ কলকাতা থেকে ছেড়ে গেদে সীমান্ত হয়ে ঢাকা পৌঁছত মৈত্রী এক্সপ্রেস৷ পেট্রোপোল- বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ঢাকা যেত বন্ধন এক্সপ্রেস৷র পাশাপাশি এনজিপি থেকে ঢাকা পর্যন্ত মিতালি এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেনও যাতায়াত করত৷ তিনটি ট্রেনের মধ্যে সবার প্রথমে শুরু হয়েছিল মৈত্রী এক্সপ্রেস৷
ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকায় এ রাজ্য থেকে সরাসরি বাংলাদেশ যেতে মূলত বিমান উপরেই ভরসা করতে হত যাত্রীদের৷ কিন্তু ব্যয়সাপেক্ষ হওয়ায় অনেকের পক্ষেই বিমানে যাতায়াত করা সম্ভব হত না৷ ফলে ট্রেন পরিষেবা শুরু হলে বহু যাত্রীই উপকৃত হবেন৷ বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় বহু মানুষ চিকিৎসার প্রয়োজনে আসেন৷ সুবিধে হবে তাঁদেরও৷