মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

নরসিংদীতে গৃহকর্মীর শরীর ঝলসে দেয়ার অভিযোগে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৪২ পাঠক
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,শুক্রবার,১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ : নরসিংদীতে মাহমুদা ইয়াছমিন ওরফে নাজমা নামে এক শিক্ষিকার ছোড়া গরম জলে ঝলসে গিয়ে অঙ্গহানির পথে গৃহকর্মী মনি আক্তার (১২)।

এ ঘটনায় গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই শিক্ষিকা ও তাঁর স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা মো. হাসান সারোয়ার ওরফে সোহেলের বিরুদ্ধে মনি আক্তারের বাবা আবদুল আজিজ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

গত ১৭ জানুয়ারি নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মন্দী মহল্লার মালাকার মোড় এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। মনি আক্তার ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। অভিযুক্ত মাহমুদা ইয়াছমিন নরসিংদী সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক।

ভুক্তভোগী মনি আক্তারের পরিবারের লোকজনের সাথে বলে জানা গেছে, মনি আক্তার কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার হাতরাপাড়া এলাকার আবদুল আজিজের মেয়ে। হতদরিদ্র রিকশাচালক আব্দুল আজিজ শহরের দাসপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। গত জানুয়ারির শুরুর দিকে শিক্ষিকা মাহমুদা ইয়াছমিন তার শিশু সন্তানকে দেখভাল করার জন্য মনি আক্তারকে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নেন।

গত ১৭ জানুয়ারি শিক্ষিকা মাহমুদা গৃহকর্মী মনি আক্তারকে গরম পানি করার কথা বলেন। পানি গরম করতে দেরি হওয়ায় সেই পানি তার ওপরই ঢেলে দেন মাহমুদা। এতে তার শরীরের অর্ধেকের বেশি ঝলসে যায়।

খবর পেয়ে মনি আক্তারের বাবা আবদুল আজিজ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন। মনি আক্তার বর্তমানে বার্ণ ইউনিটের চতুর্থ তলায় শিশু ওয়ার্ডের সাইড-১ বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ওই শিক্ষিকা ও তার লোকজনদের ভয়ভীতির কারণে ঘটনার প্রায় পৌনে এক মাস পর গত বুধবার রাতে মাহমুদা ও তার স্বামী হাসান সারোয়ারকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন বলে জানান মনি আক্তারের বাবা আবদুল আজিজ।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ছোট একটা অপরাধে তারা আমার মাইয়াডার ওপর গরম পানি ঢাইলা দিছে।’ কর্তব্যরত ডাক্তারের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, শিক্ষিকার ছোড়া গরম পানিতে মেয়েটির ডান পাশের অংশ এবং কাঁধ ও বুকের বেশির ভাগ অংশ ঝলসে গেছে। এখন তার অপারেশন করা প্রয়োজন। এতে তার একটি হাত কেটে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

দেরিতে মামলা করা প্রসঙ্গে আ. আজিজ বলেন, ‘ওই শিক্ষিকা ও তার লোকজনের হুমকির কারণে এতোদিন মামলা করার সাহস পাইনি। পরে স্থানীয় মানাবাধিকার কর্মীদের আশ্বাসে আমি ন্যায্য বিচারের আশায় নরসিংদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করি।’

এ ব্যাপারে মাহমুদা ইয়াছমিনের স্বামী হাসান সারোয়ারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগেটি অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালে রান্না করার সময় মেয়েটির অসাবধানতায় তার ওপর গরম পানি পড়ে। আর এতেই তার শরীর ঝলসে যায়।’

তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার সাথে সাথে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে তার পরিবারের অসহযোগিতার কারণে চিকিৎসা কাজে বিঘ্ন ঘটে।

নরসিংদী সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। তাই এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *