শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

বে-টার্মিনালের জমি অধিগ্রহণ করছে চট্টগ্রাম বন্দর,ভারত দেবে ৬০ কোটি ডলার

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ২৭ পাঠক
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,বৃহস্পতিবার, ২৪ মে ২০১৮:
বে-টার্মিনালের প্রয়োজনীয় সকল জমি অধিগ্রহণে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের বহু কাঙ্খিত বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েনসহ বিভিন্নমুখী জটিলতা এড়ানোর জন্য অবশেষে অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের নিকট দেয়া হবে বলে জানা যায়।

বে-টার্মিনালের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে প্রয়োজনীয় ৯০৭ একর জমির মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬৮ একর জমি অধিগ্রহণ এবং বাকি জমি সরকারের নিকট থেকে বন্দোবস্ত পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। ৬৮ একর জমি বেসরকারি লোকজনের হওয়ায় তা অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। বাকি জমি সরকারি খাস জমি হওয়ায় তা সরকারের নিকট থেকে নামমাত্র মূল্যে বন্দোবস্ত নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু ওই সকল জমির মধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মামলা থাকায় জটিলতার আশংকা করা হয়। তাছাড়া ওই সকল খাস জমির ওপর ভবিষ্যতেও ব্যক্তি বিশেষের মামলা করার সম্ভাবনা থেকে যায়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর সব শেষে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সকল জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
জানা যায়, ২০০৬ সাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণের জন্য পতেঙ্গা-হালিশহর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর তীরে জমি প্রাপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সমুদ্র উপকূলে বে-টার্মিনাল নির্মাণে অনাপত্তিপত্র প্রদানে গড়িমসি শুরু করে। বিভিন্ন সময় বন্দরের পক্ষ থেকে ধর্না দেয়ার পর দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস পর সিডিএ অনাপত্তিপত্র প্রদান করে। ইতিমধ্যে পরিবেশসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনাপত্তিপত্রসহ হামবুর্গ পোর্ট কনসাল্টিং (এইসপিসি) কর্তৃক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজও শেষ হয়। কিন্তু শুধুমাত্র জমি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে প্রকল্পটি এগুতে পারছিল না। এমনকি উক্ত টার্মিনালে বিনিয়োগ করার জন্য ভারত সরকার প্রস্তাব করেছে। বে-টার্মিনাল প্রকল্পে ৩টি টার্মিনালের মধ্যে ভারত ১টি টার্মিনালের জন্য ৬০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ প্রদানের প্রস্তাব করেছে। যা নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশও বে-টার্মিনালে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বে-টার্মিনাল হলে আগামী ৫০ থেকে ১০০ বছরে বাংলাদেশে নতুন বন্দরের প্রয়োজন পড়বে না। তাছাড়া বে-টার্মিনাল অতি অল্প সময়ের মধ্যে নির্মাণ করা সম্ভব। এরজন্য যে বিনিয়োগ হবে তার রিটার্নও আসবে দ্রুত। যে কারণে এই প্রকল্পে বিনিয়োগে সবার আগ্রহ বেশি। অপরদিকে এই প্রকল্পের আয়তন চট্টগ্রাম বন্দরের প্রায় সমান হলেও উত্পাদনশীলতা হবে অনেক বেশি। সহজে বড় জাহাজ বে-টার্মিনালে আসতে পারবে। ২৪ ঘন্টা জাহাজ চলাচল করতে পারবে। বে-টার্মিনাল প্রতিষ্ঠা হলে স্বল্প সময়ে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে সড়ক, নৌ ও রেলপথে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পণ্য পৌঁছাতে পারবে।
বে-টার্মিনালের জন্য বর্তমানে প্রাথমিক অবস্থায় ৯০৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হলেও সমুদ্র মুখে আরো প্রায় ৫০০ একর জমি পাওয়া যাবে। ইতিপূর্বে ৬৮ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও বর্তমানে ৯০৭ একর জমি অধিগ্রহণে আরো প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন পড়বে বলে জানা যায়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ জানান, বে-টার্মিনাল নির্মাণ দ্রুত শুরু করতে অধিগ্রহণের বিকল্প নেই। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম বলেন, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হলেই ভূমির উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে। তিনি বলেন, বন্দর নিজস্ব অর্থে এর উন্নয়ন কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। তাই বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ পর্যায়ক্রমে দ্রুত এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ ইতিমধ্যে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে ২০২১ সালে বে-টার্মিনালের দৃশ্যমান উন্নয়নের কথা জানিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *