শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৫:০৬ অপরাহ্ন
খন্দকার শাহিন, বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, শুক্রবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮: বাউল সম্প্রদায়ের তথ্যানুযায়ী প্রায় ৭০০ বছর ধরে মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে ৭ দিনব্যাপি ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা শুরু হয় গত সোমবার। নরসিংদী শহরের মেঘনা নদীর তীরে আয়োজিত বাউল মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য বাউল ও হাজার হাজার পুণ্যার্থী অংশ নিয়েছে। তাতে বাউল ভক্ত ও পূর্ণাথীদের ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে মেঘনার নদীর পাড়ের বাউল আকড়াধাম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশাল এ মেলায় মেঘনার পাড় ঘেষে কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরী কুটির শিল্পসামগ্রী লৌহজাত সামগ্রী, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, মিষ্টির দোকানসহ অগণিত দোকানে মহিলা-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভীড় জমাচ্ছে। এছাড়াও বিনোদনের জন্য রয়েছে চরক-দোলাসহ রয়েছে নানা রাইড ও বাউল শিল্পীরা নানা গানের মধ্য দিয়ে আসর মাতিয়ে তোলছে।
বাউল আখড়ার সেবায়েত ডা. প্রানেশ বাউল বলেন,দেবতা ব্রহ্মার মহাযজ্ঞানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজা ও মেলা শুরু হয়ে চলছে বিপুলসংখ্যক বাউল এ মেলায় অংশ নিয়েছে। একই সঙ্গে দেশের পাশাপাশি ভারত ও আমেরিকা থেকে আগত বাউলরাও মেলায় যোগ দিয়েছেন।
প্রদ্যুৎ কুমার বাউল বলেন, আমাদের এই দেহের মধ্যেই সকল চেতনা বিরাজমান। তাই দেহ শুদ্ধি হলে কোন অনাচার সম্ভব না। এজন্যই আমরা গানের মাধ্যমে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মাঝে দেহ তত্ত্ব প্রচার করি।
বাবুল দেবনাথ বলেন, বাউল ঠাকুরের আধ্যাত্ত্বিক শক্তি সকল ধর্মালম্বীদের কাছে এনেছে। তিনি যে ত্যাগের মহিমার বাণী প্রচার করেছেন তা আমরা সকলের মধ্যে লালন করলে দেশে সংঘাত অশান্তি থাকবে না। বাউল ঠাকুরের আদর্শ ও বানী অনুসরনের মাধ্যমে ত্যাগের মহিমাই সকলের মন থেকে অস্থিরতা দূর করে শান্তি এনে দিতে পারে।
বাউল ভক্তরা জানান, মেঘনার তীরে আগে এ মেলা চলতো মাস ব্যাপি। মেঘনা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় সওদাগররা বড় বড় পাল তোলা নৌকা তীরে ভিড়িয়ে এ ঘাটে পূর্নস্নান করে ঘি প্রদীপ জ্বেলে মনবাসনা পূর্ন করতে আসতেন। এখান থেকে তারা কাঠের তৈরী খাট-পালংসহ নানা গৃহস্থালী জিনিষ পত্র সওদা করে নিয়ে যেতেন।