শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১০ অপরাহ্ন
ভারত বায়োটেক এর নিজের আবিষ্কৃত কোভ্যক্সিন ভারতে দ্বিতীয় অনুমোদিত কোভিড১৯ টিকা।
প্রচলিত প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে কোভিড১৯ এর নিষ্ক্রিয় ভাইরাস দিয়ে এ টিকা তৈরী।
হায়দ্রাবাদ ভিত্তিক ‘ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল’ এরি মধ্যে রোটা ভাইরাস এর বিরুদ্ধে কার্যকর ‘রোটাভ্যাক’ তৈরি করে সুনাম কুড়িয়েছে। চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস এর টিকা তৈরিতেও এ প্রতিষ্ঠান এর অবদান আছে।
‘ভারত বায়োটেক’ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন এর সহযোগিতায় নাকে ব্যবহার করা যায় এমন ‘একটা ডোজের টীকা’ তৈরীরও গবেষনা চালাচ্ছে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ ও ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলোজির সহযোগিতায় ভারতে বিস্তৃত কোভিড১৯ ভাইরাস এর স্ট্রেন নিষ্ক্রিয় করে নীরিক্ষাধীন টিকা প্রস্তুত করে ‘ভারত বায়োটেক’।
প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের সফল ট্রায়ালের পর গত নভেম্বর, ২০২০ এ ২৫০০০ স্বেচ্ছাসেবীকে নথিভূক্ত করে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়।
কোলকাতায় রাজ্যের পুর ও নগর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এ ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে টিকা নিয়েছেন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
ডিসেম্বরে এর শেষ সপ্তাহে ২৪,০০০ জনকে প্রথম ডোজ ও ১০,০০০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ও ফল, অনুমোদন এর জন্য ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া) কাছে উপস্থাপন করা হয়।
গত দোসরা জানুয়ারি, ২০২১ শর্ত সাপেক্ষে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ‘কোভ্যাক্সিন’ বিতরণের ‘জরুরী ব্যবহার অনুমোদন’ দেওয়া হয়।
তৃতীয় পর্ব শেষ না হওয়ার আগেই অনুমোদন দেওয়ায় এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
রাশিয়ায় গামালিয়া ইন্সটিটিউট এর ভ্যাক্সিন ‘স্পুতনিক ভি’ এবং চীনের ক্যানসিনোর এডেনোভাইরাস ভিত্তিক টিকার ক্ষেত্রেও তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগে এমন অনুমোদন দেওয়া হয়েছিলো।
এ পর্যন্ত ব্যবহৃত বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে টিকাগুলোর প্রায় সবই এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, সেদিক থেকে এটা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এক প্রযুক্তি।
ভারতীয় মুদ্রায় ডোজ প্রতি একশ টাকার এ টিকাটি এরি মধ্যে পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার অন্তত দশটি দেশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘অকুজেন’ যুক্তরাষ্ট্রে এর বিপণন এর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে।
চীনের রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম এর একাধিক টিকা নিষ্ক্রিয় কোভিড১৯ এর ভাইরাস দিয়ে তৈরি। সফল তৃতীয় পর্যায় শেষে সংযুক্ত আরব আমীরাতে এ টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়, এটি দিয়ে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়।
একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক ‘করোনাভ্যাক’ তৈরি করে, ইন্দোনেশিয়াতে এ টিকা ব্যবহার হচ্ছে।
ফ্রান্সের ‘ভ্যালনেভা’ নিষ্ক্রিয় করোনা ভাইরাস দিয়ে তৈরি নিরীক্ষাধীন টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়াল শুরু করেছে গত ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২০।
লেখক – জেরিয়াট্রিক ও জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, ইংল্যান্ড।