শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম,বুধবার,০৩ জানুয়ারী, ২০১৮ : সাবেক রাষ্ট্রদূত এম মারুফ জামানের নিখোঁজের এক মাস পেরিয়ে গেল অথচ পুলিশ এখনো হদিস পায়নি। বিদেশ ফেরত মেয়েকে আনতে গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের উদ্দেশে ধানমন্ডির বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ হন সাবেক রাষ্ট্রদূত। পুলিশের কাছে নেই কোনো তথ্য। অন্যদিকে পরিবার রয়েছে শঙ্কায়।
নিখোঁজের পরদিন ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মারুফ জামানের ব্যবহৃত গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো: গ-২১-১৩৯৯) রাজধানীর তিনশ ফুট রাস্তা থেকে খিলক্ষেত থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর মারুফ জামান নিখোঁজ রয়েছেন উল্লেখ করে ওই দিনই ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-২১৩) করে তার পরিবার। ৩১ দিন পার হলেও থানা পুলিশ বা গোয়েন্দা পুলিশ মারুফ জামানকে উদ্ধার করতে পারেনি। শঙ্কিত পরিবারকে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্যও দিতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, মারুফ জামান এখনো ফিরে না আসায় পরিবারটি দিন কাটাচ্ছে শঙ্কায়, রয়েছেন আতঙ্কে। গত এক মাসে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ ব্যক্তি ফিরে আসায় তারা আশায় বসে রয়েছেন যেকোনো সময় ফিরে আসবেন মারুফ জামান।
নিখোঁজ মারুফ জামানের ছোট মেয়ে সামিহা জামান বলেন, এক মাস হতে চললো কিন্তু বাবার ফিরে আসার কোনো খবর নেই। থানায় জিডি করার পর আমরা ভরসায় রয়েছি বাবাকে উদ্ধার করে পুলিশ আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেবে।
বাবা নিখোঁজ হওয়ার পরপরই বাসায় মুখোশধারীরা বাবার ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ক্যামেরা ও মোবাইল নিয়ে যায়, আমরা পুলিশকে সিসিটিভির ফুটেজ দিয়েছি, তবুও তারা কারা সেই পরিচয় পুলিশ উদ্ঘাটন করতে পারেনি বলে জানান সামিহা।
এদিকে পুলিশ বলছে, নিখোঁজের পরপর মারুফ জামানের বাসায় মুখোশ পরিহিত সুঠামদেহীর তিনজনকে শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে তাদের চেহারা পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না। মারুফ জামানের নিখোঁজের পর বাসার ল্যান্ডফোনে যে দুটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল এসেছিল সেগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি তার অবস্থান শনাক্তের জন্য তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মারুফ হোসেন সরদার জানান, নিখোঁজ মারুফ জামানকে খুঁজে পেতে পুলিশের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তার বিষয়ে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি। তবে আমরা তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করছি।
গত ৪ ডিসেম্বর মেয়ে সামিহাকে বিমানবন্দর থেকে আনতে সন্ধ্যায় ধানমন্ডির বাসা থেকে গাড়ি চালিয়ে বের হন মারুফ। এর কিছুক্ষণ পর ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ বাসার ল্যান্ডফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল দিয়ে মারুফ পরিচয়ে গৃহকর্মীকে বলা হয় কম্পিউটার ঠিক করতে হবে। কেউ বাসায় এলে যেন তার কম্পিউটার দিয়ে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর ৮টা ৫ মিনিটের দিকে তিনজন লোক বাসায় এসে তার ল্যাপটপ, কম্পিউটারের সিপিইউ, ২টি ক্যামেরা ও একটি স্মার্টফোন নিয়ে যায়। সে সময় মারুফের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবারের সদস্যরা।
মারুফ জামান সর্বশেষ ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। এর আগে তিনি কাতারের রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাউন্সেলর হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি ১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনীতে সিগন্যাল কোরের ‘ষষ্ঠ কোর্স’ ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগ দেন। পরে ১৯৮২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন এবং ২০১৩ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি নিয়ে অবসরে যান।