বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ‘নিষিদ্ধ’

আন্তর্জাতিক | বর্তমানকণ্ঠ ডটকম- / ৪৫ পাঠক
বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে রাজনৈতিক দলগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম তালেবান প্রশাসন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বুধবার তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশটিতে কার্যকর থাকা শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো ভূমিকা নেই। তাই এসব দলের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। খবর দ্য ডনের।

তালেবান সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন বিচারমন্ত্রী শেখ মৌলভি আবদুল হাকিম শারায়ে বুধবার রাজধানী কাবুলে তার মন্ত্রণালয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। কারণ, শরিয়াহ আইনে এসব দলের কোনো স্থান ও ভূমিকা নেই। জাতীয় স্বার্থরক্ষায় এসব দল কোনো কাজ করে না। এমনকি নাগরিকরাও এসব দলের কার্যক্রম পছন্দ করে না। পরে বিচারমন্ত্রী আবদুল হাকিমের এ ঘোষণা বিবৃতি আকারে প্রকাশ করা হয়। তালেবাননিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ওই বিবৃতি প্রচার করে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ ঘোষণা এটাই প্রমাণ করে যে, আফগানিস্তানে বহুপক্ষীয় রাজনৈতিক চর্চা বন্ধ করতে চায় তালেবান। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রক্ষমতায় নিজেদের একচেটিয়া অধিকার ধরে রাখার পক্ষে তারা। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ওই সময় তালেবানের প্রত্যাবর্তন ও পশ্চিমাদের বিশৃঙ্খল পশ্চাদপসরণের ঘটনাপ্রবাহ আফগানিস্তানের ওপর দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটের উদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।

এ পর্যন্ত কোনো দেশই তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। ক্ষমতায় এসেই প্রচলিত নানা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনে তালেবান। বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় নারীদের শিক্ষা ও একাকী চলাফেরায়, এনজিও কার্যক্রমে। সম্প্রতি আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার (রূপচর্চাকেন্দ্র) বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছে তালেবান সরকার। প্রকাশ্যে গানবাজনাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি বিপুল অর্থের বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে ফেলে তালেবান সদস্যরা। এসবের ধারাবাহিকতায় এবার রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে লাগাম টানা হয়েছে।

এদিকে তালেবান সরকারের ক্ষমতা দখলের পর বেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। খাবার ও ওষুধসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য আমদানি করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তালেবান সরকারের হাতে নেই। বাজারে পণ্য সরবরাহ কম থাকায় সেগুলোর দামও নাগালের বাইরে। দেশটির ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মধ্যে ১ কোটি ১৪ লাখ মানুষ খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে। অপুষ্টিতে ভুগছে ৩৫ লাখ শিশু। হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতির তত অবনতি হচ্ছে।

জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকে বিপুল পরিমাণে মানবিক সহায়তা পাওয়া না গেলে নিকট ভবিষ্যতে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে আফগানরা। এরকম পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত দেশটির সার্বিক অবস্থাকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *