সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
স্পোর্টস ডেস্ক,বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৮: ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে ২১৬ রান করেও প্রতিপক্ষকে আটকানো যায় না। আর সেখানে ৫০ ওভারে ২১৬ রান! যে কেউ আগাম বলে দেবে- এটা মামুলি স্কোর। তবে বোলিং বান্ধব উইকেটে ২০০ রানও যে পাহাড় সমান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সেটি আরও এবার দেখলো মিরপুরের গ্যালারি। বরং রসিকতা করে এখন অনেকেই বলে ফেলতে পারেন- বাংলাদেশ তো ১২৬ রান করলেও জিততো। কেননা, মাশরাফি-সাকিবদের অনবদ্য নৈপুণ্যে জিম্বাবুয়েকে মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে দিয়ে রেকর্ড গড়া সহজ জয়ই তো পেয়েছে বাংলাদেশ।
আর ঘরের মাঠে খেলা মানে তো বাংলাদেশ এক অজেয় দল। টাইগারদের হারানোর সাধ্য কার আছে। তাইতো মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) মাশরাফির দলকে অল্প রানে বেঁধে রেখেও কাজের কাজটি করতে পারলো না হিথ স্ট্রিকের জিম্বাবুয়ে। উল্টো তারা হেরেছে ৯১ রানের বড় ব্যবধানে। তাতে করে টাইগারদের এই জয়টাকে দাপুটে না বলে উপায় আছে কি?
যদিও এদিন আগে ব্যাট করে মাত্র ২১৬ রানের পুঁজি গড়ার পর সামান্য শঙ্কার মেঘ জমা বাঁধতে থাকে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে। কিন্তু তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে টাইগারদের ৯ উইকেটে গড়া ২১৬ রানের স্কোরটাই জিম্বাবুয়ের জন্য এদিন পাহাড় সমান হয়ে দাঁড়ালো।
ব্যাট হাতে ফিফটির পর বল হাতে এদিনও ৩ উইকেট নিলেন আগের দুই খেলার ম্যান অব দ্যা ম্যাচ সাকিব। ২টি করে উইকেট নিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা সানজামুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান। তাতে ৩৬.৩ ওভারে ১২৫ রানেই গুঁড়িয়ে গেল জিম্বাবুয়ের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত লো স্কোরিং ম্যাচেও বাংলাদেশ পেল ৯১ রানের বড় এক জয়। আর এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতে অপরাজিত থাকলো টাইগাররা।
২১৬ রানের কম করে বাংলাদেশ এর আগে জিতেছে মাত্র তিনবার। এর মধ্যে ঘরের মাঠে দুইবার এবং বিদেশে একবার। ২০১০ সালে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে ১৭৪ রান করেও ৩ রানের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরের বছর একই ভেন্যুতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৫ রান করেও এসেছিল ২৭ রানের জয়।
এদিন সেই শেরেবাংলাতেই হলো চতুর্থ সর্বনিম্ন রান করে জয়, যেখানে মোস্তাফিজুর রহমানের কথা আলাদা করে বলতেই হবে। ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজ যখন বোলিংয়ে এলেন জিম্বাবুয়ের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৫১। এখান থেকে যে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ যে ছিল না তা নয়।
কিন্তু এই ‘কাটার-স্লোয়ার’ বিশেষজ্ঞ পেসার জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলেছেন টানা ২৩টি ‘ডট’ দিয়ে! এর মধ্যে মেডেন টানা তিন ওভার! চতুর্থ ওভারও মেডেন হতো যদি শেষ বলে পিটার মুর সিঙ্গেল না নিতেন। বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো সিকান্দার রাজাকে (৩৯) এবং শেষ উইকেট কাইল জার্ভিসকে ফিরিয়ে জয়েও দারুণ ভূমিকা রেখেছেন মোস্তাফিজ।
মোস্তাফিজের এই ‘হাড় কিপটে’ বোলিংয়ে ভীষণ চাপে পড়া জিম্বাবুয়ে সানজামুল ইসলামকে দিয়েছে হ্যাটট্রিক করার সুযোগ। কিন্তু সানজামুল পারেননি। ২৩তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছিলেন পিটার মুর ও ম্যালকম ওয়ালারকে। কিন্তু পরের বলটি হাফভলি লেংথে করে হতাশ করেন সানজামুল। পরে জয়ের শেষ কাজটুকু সম্পন্ন করেন সাকিব।
আগের দুটি ম্যাচে সাকিব আল হাসান ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেও এদিন ম্যাচসেরা হয়েছেন তামিম ইকবাল।
এরআগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সাকিব-তামিমের দায়িত্বশীল ফিফটিতে ৯ উইকেটে ২১৬ রানের স্কোর দাঁড় করায় স্বাগতিকরা। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেটে নেন ক্রেমার। আর ৩ উইকেট পান জার্ভিস।