শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

খুচরা বাজারে সবজির দাম পাইকারির দ্বিগুণ

বর্তমানকণ্ঠ ডটকম / ৪৪ পাঠক
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক, বর্তমানকণ্ঠ ডটকম, রবিবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮: রাজধানীতে আবারও সবজির দাম উর্ধ্বমুখী। বিশেষত পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে সবজির দাম দ্বিগুণ এবং ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণেরও বেশি দেখা যাচ্ছে। রাজধানীর কাওরান বাজার সবজির পাইকারি বাজার হিসেবেই পরিচিত।

এখানকার পাইকারি বাজারে রবিবার প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাত্র ১০০ গজ দূরে কাওরান বাজার সিটি করপোরেশন সুপার মার্কেট খুচরা বাজারে একই মুলা বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। হাতিরপুল বাজারে এ মুলাই ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। একই মুলা মতিঝিলের রাস্তায় ২০ থেকে ২৫ টাকায় এবং খিলগাঁও এলাকায় ভ্যানে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজধানী ঢাকার কাঁচা বাজারগুলোতে রীতিমতো নৈরাজ্য চলছে। পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা দামের কোনো সামঞ্জস্যতা নেই। মিল নেই এক বাজারের সাথে অন্য বাজারের। পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে সামান্য দূরে এনেই দ্বিগুণ দাম হাঁকেন খুচরা বিক্রেতারা। একই বাজার থেকে কিনে এনে একেক দোকানি বিক্রি করছেন একেক দরে। আর যারা ভ্যান কিংবা মাথায় ফেরি করছেন তাদের দাম অন্যরকম।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি পাইকারিতে ১৫ থেকে ১৮ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা পর্যায়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে পাইকারি থেকে অন্তত ২০ টাকা বাড়িয়ে খুচরাপর্যায়ে শিম ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শালগম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করল্লা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। শীতের মওসুমে সবজির এমন অযৌক্তিক দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতাসাধারণ।

মালিবাগ কাঁচাবাজারে কথা হয় গৃহিণী রওশন জামিলের সাথে। তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই খুচরা দোকানদার থেকে সবজি কিনি। তাই তারা বেশি নিচ্ছে না কম নিচ্ছে সেটি তারতম্য করতে পারি না। তবে এবারে শীতের মওসুমে সবজির দাম আগের থেকে বেশি। তিনি বলেন, বাজার মনিটরিং না থাকলে খুচরা দোকানিরা তো বাড়তি লাভ করতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। বাড়তি দামের পক্ষেও যুক্তি রয়েছে খুচরা বিক্রেতাদের।

খিলগাঁও কাঁচাবাজারের বিক্রেতা মিজান রহমানের দাবি, বাজারে সব জিনিসের দাম বেশি। কাজেই কোনো কিছু কম দামে বিক্রি করার সুযোগ নেই। তার মতে, সবজি বিক্রি করে যে লাভ হয় তা দিয়ে কর্মচারীর বেতন দিতে হয়। দোকান ও বাসার ভাড়া দিতে হয়। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির বিল দিতে হয়। চাল, ডাল, লবণ ও তেল কিনতে হয়। সব কিছুরই তো দাম বেশি। সবজির দাম কম হওয়ার সুযোগ কই?

খুচরা বাজারে রবিবার প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ভারত থেকে আমদানিকৃত বড় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। এ ছাড়া আদা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ভারতীয় মসুরের ডাল ৮০ টাকা এবং দেশি ডাল ১১০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। আটার কেজি ৩৪ থেকে ৩৫, ময়দা ৬০ থেকে ৬৫, সয়াবিন তেলের লিটার ১০৫ থেকে ১১০ টাকা এবং ডিমের ডজন বিক্রি হয় ৯০ টাকায়।

মাছের বাজারে প্রতি কেজি রূপচাঁদা ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকা, ইলিশ মাছ ৬৫০ থেকে ১৭০০ টাকা, কাতলা ২৮০ থেকে ৩৫০, রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, টেংরা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৪৬০ থেকে ১০০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৮০ বিক্রি হয়। বাইম, বোয়াল, আইড়, পোয়া, পাবদা প্রভৃতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে।

এ দিকে সপ্তাহের ব্যবধানে চালের বাজারে বড় মাপের পার্থক্য দেখা যায়নি। মোটা স্বর্ণা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, বিআর ২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, নাজিরশাইল মানভেদে ৫৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম আরও বাড়বে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *