শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

ফ্রান্সে পৌছার পথিমধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাংলাদেশীর মৃত্যু

সৈয়দ মুন্তাছির রিমন, ফ্রান্স । / ২৮ পাঠক
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশি যুবকদের কাছে ইউরোপ একটি স্বপ্ন। ইদানিং এই স্বপ্নকে জয় করতে অবৈধ পথে পাড়ি দিচ্ছে অসংখ্য যুব। তাদের একশ্রেণি একাংশ কাজের ভিসা ও উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে বৈধ পথে। অন্যাংশ সমুদ্র পথ ও জঙ্গল পথে বিভিন্ন গেইমের অবৈধ পথে দালালের
মাধ্যমে স্বপ্নকে জয় করতে চাচ্ছে। তেমনি একজন বাংলাদেশি ইটালি থেকে ট্রেনের ছাদে চেপে ফ্রান্সে পৌছার পথিমধ্যে সীমান্তে যাবার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। গত কয়েক বছরে এভাবে সীমান্ত পারাপার করতে গিয়ে মারা গেছেন অন্তত বিশজন প্রবাসী বাংলাদেশি ।

গত রোববার (২৯শে আগস্ট) ইটালির পেলিয়া অঞ্চলের কাছে ভেন্তিমিগ্লিয়াতে ট্রেনের ছাদে বসে ফ্রান্স সীমান্ত যাবার সময় মৃত্যু হয় এক ১৭ বছর বয়সি বাংলাদেশি যুবকের। ট্রেনটি একটি সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

ইটালিয়ান শেষ সীমান্ত স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়ার সময় ছাদে লাফ দিয়ে ওঠে সেই তরুণ। ট্রেনের চালক প্রাণপণ চেষ্টা করেন ব্রেক কষে তার প্রাণ বাঁচাতে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তারপর উদ্ধারকর্মীরা যখন তরুণের মৃতদেহ খুঁজে পায় তখন তার পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে মৃত তরুণের বয়স এবং পরিচয় লিখা ছিল। এর সাথে তার পকেট থেকে স্থানীয় থানায় হাজিরা দেবার নির্দেশের কাগজ পাওয়া যায়।

স্থানীয় দমকলকর্মীরা মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে রেল চলাচল কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন স্থানীয় পুলিশ, উদ্ধারকর্মী ও ভেন্তিমিগ্লিয়ার মেয়র গায়েতানো স্কুলিনো। মেয়র স্কুলিনো ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে ইটালিয়ান রেল কর্তৃপক্ষকে রেল যাতায়াতের দুই দিকেই উন্নত নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

গত কয়েক বছরে ফ্রান্সে পৌছার জন্য এই পথে যেতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০জন। এর মধ্যে ২০১৬ সালের অক্টোবরে ১৭ বছর বয়সি ইরিত্রিয়ান ও মিলেত তেসফামারিয়াম। এছাড়া এভাবে পার হতে গিয়ে অন্যদিক থেকে ধেয়ে আসা ট্রাকের তলায় চাপা পড়ে মারা যান অভিবাসী প্রত্যাশী।

এছাড়া এক মাস আগেও ফ্রান্স-ইটালি সীমান্তের একটি ব্রিজের নীচ থেকে উদ্ধার হয় আরেক অভিবাসন প্রত্যাশীর দেহ ও রেললাইন সংলগ্ন রাস্তায় হেঁটে ফ্রান্স পৌঁছাতে গিয়ে ট্রেনের তলায় চাপা পড়ে মারা যান এক আলজেরীয় যুবক।

ভেন্তিমিগ্লিয়া ও কান শহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী কোল দে মর্ট সুড়ঙ্গকে ধারাবাহিক দুর্ঘটনার কারণে স্থানীয়রা ডাকেন ডেথ পাস বা মৃত্যু পথ নামে। মৃতদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন মানবপাচারকারী দালালকে বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে এ পথে যাত্রা করার পায়তারা করেন। কিন্ত বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছানোর আগে টাকা পেয়ে গেলে এই অভিবাসন প্রত্যাশীদের একা রেখে চলে যায় মানবপাচারকারী দালাল চক্র। এব্যাপারে ফ্রান্সে সদ্য শরনার্থীদের নিয়ে চিত্রায়িত “পথ যাত্রী“ নাটক র্নিমাতা সৈয়দ সাহিল জানান কোন মৃতই কামনা যোগ্য নয়। যেখানে জীবন বিপন্ন হতে বাধ্য সে পথ পরিহার করা দরকার।

জীবিকার চেয়ে জীবনের মুল্য অনেক বেশি। তাই স্বপ্ন সাগরে নয় বরং বাস্তব সম্মুত হওয়া প্রয়োজন। বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া ঐ বাংলাদেশী যুবকের পরিচয় এখন পাওয়া যায়নি ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *